রাজ্যের ডিএ (Dearness Allowance) মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) বিচারাধীন। কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ডিএ পাবেন কি না তা নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। এরই মধ্যে এল বড় আপডেট। বছরের শুরুতেই অর্থাৎ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসেই ডিএ পেতে পারেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা (West Bengal State Govt Employee)।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এই নিয়ে খবরও প্রকাশ করেছে। সরকারি কর্মীদের একটি মহলের দাবি বছরের শুরুতেই সরকারি কর্মীদের ৩ শতাংশ ডিএ বাড়াতে পারে রাজ্য সরকার। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের আওতায় এই ডিএ বাড়ানো হতে পারে। প্রসঙ্গত, রাজ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হয়েছে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে।
আরও পড়ুন : মর্মান্তিক '৭১: সাড়ে ৪০০ মাড়োয়ারি ও বাঙালি হিন্দুকে যে রাতে কোপাল পাক বাহিনী
২০২১ সালের ১ জানুয়ারি ৩ শতাংশ ডিএ দিয়েছে রাজ্য সরকার। চলতি বছরে আর ডিএ- দেওয়া হয়নি। সেই সূত্রেই সরকারি কর্মীদের আশা, এবছরও জানুয়ারি মাসে ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করতে পারে রাজ্য সরকার। যদিও সরকারের তরফে এই নিয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি তবে নবান্ন সূত্রে খবর, এই নিয়ে ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়েছে।
রাজ্য সরকার যে ৩ শতাংশ ডিএ দিতে পারে তার পিছনে যুক্তি আছে বলেও মনে করছেন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের রায় মেনে রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের বকেয়া ডিএ দিতে হলে খরচ হবে ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা। সরাসরি কর্মচারিদের জন্য লাগবে ১১ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। সরকারি সাহায্য প্রাপ্তদের জন্য লাগবে ১৮ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা।পেনশনকারীদের জন্য খরচ হবে ১১ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। এত টাকা রাজ্য সরকার দিলে অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হবে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এত টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য রাজ্যের নেই। তা কোর্টেই স্বীকার করে নিয়েছে সরকারি আইনজীবী।
আরও পড়ুন : রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র নতুন UPDATE, মামলা নিয়ে বড় খবর
তবে রাজনৈতিক কারবারিদের দাবি, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে সরকারি কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে ডিএ ঘোষণা করতেই পারে রাজ্য় সরকার। হতে পারে সেটা ৩ শতাংশ। তবে রাজ্য সরকার চাইবে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ নিয়ে ক্ষোভ যাতে প্রশমিত হয়।
যদিও ৩ শতাংশ ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মীরা পেলেও তাঁরা খুশি হবেন না বলে দাবি সরকারি কর্মীদের একাংশ ও ডিএ-র দাবি করা সংগঠনগুলো। এই বিষয়ে সরকারি কর্মচারি পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'হাইকোর্ট যে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তা পঞ্চম বেতন কমিশনের। সেটাকে সম্পূর্ণ চেপে গিয়ে এই সরকার মাত্র ৩ শতাংশ ডিএ দিলে তাতে সরকারি কর্মীরা খুশি হবেন না। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র। আর এই রাজ্যের সরকার যখন ৩ শতাংশ ঘোষণা করবে তখন কেন্দ্র আরও ৪ শতাংশ বাড়িয়ে দেবে। ফলে তখন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৪২ শতাংশ পাবেন। আর আমরা মাত্র ৬ শতাংশ। অর্থাৎ ৩৬ শতাংশ বকেয়া থেকে যাবে। ফলে সরকারি কর্মীরা খুশি হবেন না। সেটাই স্বাভাবিক। আমাদের যে দাবি আছে সেই দাবির মান্যতা তাহলে কোথায়? এই সরকারকে সেটা ভাবতেই হবে। সরকারি কর্মীরা ভালোভাবেই জানেন, মাত্র ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করে সরকার ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এতে সরকারি কর্মীরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার ভুলে যাবেন না। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাওয়ার যে দাবি, সেখান থেকে তাঁরা সরবেন না।'