১ লক্ষ টাকা ছাড়িয়েছে ১০ গ্রাম সোনার দাম। সামনে বিয়ের মরসুম। ধনতেরাস। চাহিদা আরও বাড়বে। আর চাহিদা বাড়লে বাড়বে সোনার দর। প্রশ্ন উঠছে, সোনায় বিনিয়োগ করলে কি লাভবান হবেন? মাত্র ১ টাকা দিয়ে সোনা কেনা শুরু করতে পারেন। আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিক পড়ছেন! গয়না ছাড়াও সোনায় বিনিয়োগ করতে পারেন। কীভাবে সোনায় বিনিয়োগ করে মোটা রিটার্ন পেতে পাবেন?
সোনা কেনাবেচার তিন ধরনের বিকল্প রয়েছে। সেগুলি হল,গোল্ড ইটিএফ, গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ডিজিটাল সোনা। শুরুতে সোনার ইটিএফ সম্পর্কে কথা বলা যাক। বাড়িতে সোনা রাখতে ভয় পেলে বা পর্যাপ্ত টাকা না থাকলে বিনিয়োগ করতে পারেন। ইটিএফ মানে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড। এর লেনদেন চলে স্টক এক্সচেঞ্জে। অর্থাৎ বাজারে সোনার দাম বাড়ার বা কমার সঙ্গে সঙ্গে সোনার ইটিএফের দামও বদলায়। এতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পুরো বিষয়টি বুঝে নিন।
সোনার বারের মতোই গোল্ড ইটিএফ ৯৯.৫% খাঁটি। যে কোনও সময় এগুলি কিনতে এবং বিক্রি করতে পারেন। এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়। দোকানে যাওয়ার দরকার হবে না। সোনা খাঁটি না নকল তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। লাগবে খালি একটা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট। সোনার বাড়লেই আপনি হবেন মালামাল। কতটা কামাবেন? এক বছর, তিন বছর ও ৫ বছরে গোল্ড ইটিএফ কতটা রিটার্ন দিয়েছে, তা নিজেই বুঝে নিতে পারবেন।
স্কিম | ১ বছর | ৩ বছর | ৫ বছর |
LIC Gold ETF | ৫১.৯৬% | ৮২.৭৬% | ৮২.৭৮% |
UTI Gold ETF | ৫১.৬৯% | ১১২.০৮% | ৯৭.৩৭% |
Edelweiss Gold ETF | ৫১.৩৪% | ৬৯.১৫% | ৬৯.১৫% |
Tata Gold ETF | ৫১.২৭% | ৫০.৪২% | ৫০.৪২% |
Axis Gold ETF | ৫১.১৬% | ১১০.২১% | ১০৩.৮৯% |
সূত্র Dhan.co
তবে গোল্ড ইটিএফ বেচতে গেলে ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্স দিতে হবে। এক বছরের মধ্যে বিক্রি করলে ২০ শতাংশ, আর এক বছর পরে বেচলে ১২.৫ শতাংশ দিতে হবে।
এবার আসা যাক, গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ডে। এই মিউচুয়াল ফান্ড বেশিরভাগই গোল্ড ইটিএফ, সোনার খনি বা সোনা কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত সংস্থায় টাকা লাগানো হয়। শেয়ারে বাজারে বিনিয়োগের ব্যাপারে আইডিয়া না থাকলে এই ফান্ডে টাকা খাটাতে পারেন। মাত্র ৫০০ টাকা দিয়েই বিনিয়োগ শুরু করুন। করতে পারেন SIP। লকিং পিরিয়ড নেই। যখন ইচ্ছা ভাঙাতে পারেন। গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড ডেট মিউচুয়াল ফান্ডের মতো করযোগ্য। লংটার্ম ও শর্টটার্ম ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্স দিতে হয়। রিটার্ন সোনার দামের চেয়েও বেশি হতে পারে। তবে গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ডে ঝুঁকিও রয়েছে। মানে সোনার দাম বাড়ল ১০ হাজার টাকা। অথচ আপনার বিনিয়োগ বাড়ল ৫ হাজার টাকা।
স্কিম | ১ বছর | ৩ বছর | ৫ বছর |
SBI Gold Fund Direct | ৫১.৬৭% | ২৭.৯৭% | ১৫.৪১% |
HDFC Gold Fund | ৫১.১৭% | ২৭.৮৪% | ১৫.২৮% |
Kotak Gold Fund | ৫১.১৬% | ২৭.৪২% | ১৫.০৯% |
Nippon India | ৫১.৩২% | ২৭.৪২% | ১৫.০৯% |
ICICI Prudential | ৫১.৩২% | ২৭.৬৪% | ১৫.০৬% |
সূত্র Dhan.co
সোনায় বিনিয়োগের তৃতীয় অপশন ডিজিটাল গোল্ড।
এতে বিনিয়োগ করে সোনার বার, মুদ্রা বা গয়নাও গড়াতে পারেন। পুরোটাই অনলাইনে। আপনি যে সোনা কিনছেন তাও নিরাপদ থাকবে। এর দায়িত্ব আপনার নয়। আপনি যে প্ল্যাটফর্ম থেকে কিনছেন তাদের দায়। চাইলে আসল সোনায় ভাঙিয়ে নিতে পারেন। সেটা বাড়ির ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। এজন্য বেসিক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। একবারে ১০ টাকা থেকে ১০ লক্ষ পর্যন্ত সোনা কিনতে পারেন। সোনার যে দাম চলছে, সেই দামেই কিনতে হবে। দিতে হবে ৩% জিএসটি। এর কী কী সুবিধা? ন্যূনতম লক-ইন পিরিয়ড নেই। বিনিয়োগের পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বিক্রি করতে পারেন। ডেলিভারি এবং মেকিং চার্জ দিতে হবে। চাইলে উপহার দিতে পারেন বন্ধুবান্ধবদের। প্রশ্ন হল কীভাবে কিনবেন ডিজিটাল সোনা?
একাধিক সংস্থা এই সুবিধা দেয়। অ্যাকাউন্ট ফি-ও লাগে না। তবে শর্তগুলি খুঁটিয়ে দেখে নিন। যেমন- বিমা আছে কিনা। বিনিয়োগের কত সময় পরে বিক্রি করতে পারবেন। চার্জও দেখুন।
মোটামুটি জেনে রাখুন- অ্যাপ স্টোর থেকে ডিজিটাল অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হয়। অ্যাপে লগ ইন করার পর সার্চ বারে ডিজিটাল সোনা লিখুন। আসবে Buy অপশন। ৫ গ্রাম, ১০ গ্রাম বা টাকার হিসেবে কিনুন। ৫ মিনিটের জন্য লক থাকবে দাম। অর্থাৎ বাজারে দাম বাড়লেও ৫ মিনিটের জন্য একই দামে সোনা কিনতে পারবেন। সেই সঙ্গে দিতে হবে ৩% জিএসটি। ৫০০ টাকার বেশি সোনা কিনলে KYC করতে হবে। পরবর্তী ধাপ হল পছন্দের পেমেন্ট পদ্ধতি বেছে নেওয়া। Proceed to Pay তে ক্লিক করুন। পেমেন্ট করুন। পরে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন। অথবা সোনার কয়েন পেতে পারেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া থাকা সোনার দোকানে গিয়ে গয়নাও গড়াতে পারেন।