চা-শিল্পে সংকট। দেশি-বিদেশি ক্রেতারা ফিরিয়ে দিচ্ছেন ভারতীয় চা। অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক থাকায় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার থেকে চা ফেরত আসছে। ফলে চায়ের দাম প্রতি কেজিতে ৩০-৪০ টাকা কমে গিয়েছে একধাক্কায়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-র কাছে এ খবর নিশ্চিত করেছেন ভারতীয় চা রপ্তানিকারকদের সংগঠন (ITIA)-র চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া।
কলকাতা টি বোর্ডে নিলামে বিক্রিত প্রায় ৩৯ হাজার কেজি চা ফেরত দিয়েছেন ক্রেতারা। গোটা ঘটনাক্রমে ধাক্কা খেয়েছে চা শিল্প। চা পাতার দাম গত এক মাসে প্রতি কেজিতে কমেছে ২৭ টাকা। প্রতি কেজি ২১৪ টাকা থেকে কমে ১৮৭.০৬ টাকা হয়ে গিয়েছে। বছর ধরলে কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা কমে গিয়েছে দর। গত বছর যে চা বিক্রি হয়েছিল ২২৬.৭৭ টাকা প্রতি কেজি দরে, এখন সেটাই বিকোচ্ছে ১৮৬.৪১ টাকায়।
শ্রীলঙ্কার আর্থিক স্থিতি দুর্বল হওয়ায় বিদেশে চায়ের বাজার দখল করার সুযোগ এসেছিল ভারতের সামনে। কিন্তু কীটনাশক মাত্রাতিরিক্ত থাকায় ধাক্কা খাচ্ছে চা-রফতানি। আইটিইএ-এর চেয়ারম্যান অংশুমান কানোরিয়া বলেন,'সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার মানদণ্ড অনুসরণ করতে হয় ভারতের চা উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে। তা সত্ত্বেও চায়ের মধ্যে অস্বাভাবিক মাত্রায় রাসায়নিক মিলেছে।' চা মোড়কজাতকারী ও রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছেন কানোরিয়া। তাঁর কথায়,'চা উৎপাদনকারীদের বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে চায়ের দাম কমার সঙ্গে কীটনাশক ও রাসায়নিকের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি একটা অংশের। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় চায়ের চাহিদা কম। কেনিয়ার চায়ের দাম কম হওয়ায় ভারতীয় চায়ের চাহিদা কমেছে। তবে চায়ে কীটনাশক ও রাসায়নিক বেশি থাকায় রফতানি কমে গেলে অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের দামও কমবে।
২০২১ সালে ১৯ কোটি ৫৯ লক্ষ কেজি চা রফতানি করেছিল ভারত। কমনওয়েলথ অব ইনডিপেনডেন্ট স্টেটসভুক্ত (সিআইএস) দেশগুলি এবং ইরান ছিল চায়ের অন্যতম ক্রেতা। সিআইএসভুক্ত দেশগুলো হল—আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, মলদোভা, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান। চলতি বছর ৩০ কোটি কেজি চা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল চা বোর্ড।