প্রয়াত বজাজ গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এমিরেটাস রাহুল বজাজ (Rahul Bajaj)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। ১৯৬৫ সালে বজাজ গ্রুপের ব্যাটন হাতে পেয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, নিউমোনিয়ার সঙ্গে হৃদযন্ত্র জনিত সমস্যা হয়েছিল তাঁর। বজাজের প্রেস বিবৃতি অনুযায়ী, পুণেতে পরিজনদের উপস্থিতিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন প্রবীণ শিল্পপতি।
১৯৩৮ সালের ১০ জুন ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাহুল বজাজ। তাঁর ঠাকুরদা যমনালাল বজাজ স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। ১৯২৬ সালে কোম্পানির সূচনা করেছিলেন। ১৯৪২ সালে গ্রুপের দায়িত্বভার যায় যমনলাল বজাজের ছেলে কমলনয়নের হাতে। তার কয়েক বছর পর শুরু হয় বজাজ অটোর পথ চলা। রাহুল বজাজ একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাঁর নামকরণ করেছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। নেহরু পরিবারের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে স্নাতক হন রাহুল। তার পর বম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্বার্ড থেকে এমবিএ ডিগ্রি নেন। ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে যোগ দেন বজাজ অটোয়। পরে সংস্থার সিইও হন। ৪০ বছর ধরে চেয়ারম্যান ছিলেন। গতবছর এপ্রিলে অব্যাহতি নেন রাহুল। আমৃত্যু ছিলেন বজাজ গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এমিরেটাস। ২০০১ সালে রাহুল বজাজ পদ্মভূষণ সম্মান পেয়েছিলেন। রাজ্যসভার সাংসদও হন।
আটের দশকে বজাজ স্কুটার গোটা দেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ভারতের অর্থনৈতিক উত্থানের সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছিল 'হমারা বজাজ'। পরে বজাজ এমএইট্টি হয়ে ওঠে সাধারণ মধ্যবিত্তের ভরসার সওয়ারি। বদলেও যাওয়া ভারতেও বজাজ আনুষঙ্গিক হয়ে উঠেছে। নতুন শতাব্দীতে আধুনিক প্রজন্মের মন জিতে নিয়েছে বজাজ পালসার।
রাহুল বজাজের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ি। তিনি টুইট করেছেন,'যশস্বী সমাজসেবী বজাজের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাহুল বজাজকে শ্রদ্ধাঞ্জলি। পদ্মশ্রীপ্রাপক রাহুলের সঙ্গে আমার অনেক বছরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।'
শোকপ্রকাশ করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর কথায়,'দেশের আর্থিক প্রগতিতে বড় ভূমিকা রয়েছে রাহুল বজাজের। 'বুলন্দ ভারত কি বুলন্দ আওয়াজ' প্রতিটি ঘরে অনুরণিত হয়েছে। এমন মহান মানুষকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।'
২০২১ সালে ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ফোর্বসের বিশ্ব বিলিওনেয়ার তালিকায় রাহুল বজাজ ৪২১ নম্বর স্থান পেয়েছেন। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।