গত কয়েক বছরে দেশেরে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চলে এসেছে আতসকাঁচের তলায়। একাধিক ব্যাঙ্কের মাথায় বিরাট অনাদায়ী ঋণের বোঝা। সেই সঙ্গে বেড়েছে অনুৎপাদক সম্পত্তি। বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে আলাদা করে মূলধন জোগাতে হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্যোন্নতিতে পিএনবি, ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের বিলয় ঘটানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল দেশের কোন ব্যাঙ্কে টাকা রাখা নিরাপদ? সেই তালিকা দিল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank Of India)। তাতে রয়েছে একটি সরকারি এবং দু'টি বেসরকারি ব্যাঙ্ক।
বর্তমানে দেশে বেসরকারি ব্যাঙ্কের সংখ্যা ২১। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ১২টি। এই ৩৩টি ব্যাঙ্কেই টাকা রাখেন ভারতীয়রা। কোটি কোটি গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এই ব্যাঙ্কগুলিতে। এর মধ্যে তিনটি ব্যাঙ্ক নিরাপদ- রাষ্ট্রায়ত্ত ব্য়াঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়া (State Bank of India) এবং এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক (HDFC Bank) ও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক (ICICI Bank)।
আরবিআই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে,স্টেট ব্যাঙ্ক, এইচডি এফসি ব্যাঙ্ক এবং আইআইসিআই ব্যাঙ্কের মুখ থুবড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। তাদের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাঙ্কের (Domestic Systemically Important Banks/D-SIBs) তালিকায় রাখা হয়েছে।
সমস্ত ব্যাঙ্কের ঋণ, আয়-ব্যয়, সঞ্চয় এবং ঝুঁকি খতিয়ে দেখার পরই তালিকা তৈরি করে আরবিআই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই তালিকায় ঠাঁই পাওয়ার অর্থ হল, ঝুঁকির দিক থেকে এই ব্যাঙ্কগুলি নিরাপদ। সেই সঙ্গে ঝুঁকির সম্পদের পরিমাণও বেঁধে দিয়েছে আরবিআই। এসবিআই অতিরিক্ত ০.৬ শতাংশ, এইচডিএফসি ও আইসিআইসিআই (ICICI) ০.২ শতাংশ করে ঝুঁকি সম্পত্তি রাখতে পারবে।
বলে রাখি,২০১৫ থেকে এই তালিকা তৈরি করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। দেশের অর্থনীতির জন্য় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাঙ্কগুলিকে রাখা হয় এই তালিকায়। ২০১৫ ও ২০১৬ সালেও এসবিআই ও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক এই তালিকায় ছিল।
বলে রাখি, অতিসম্প্রতি ৩২৫০ কোটি টাকার ঋণ প্রতারণা-কাণ্ডে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইএ তথা এমডি চন্দা কোছরকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছিল আরবিআই-র নামও। তবে আদালতে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক হলফনামা দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, এর সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই।