Visva-Bharati University: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva-Bharati University)-এ নতুন করে ঘণ্টাতলা তৈরি শুরু করতে চলেছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (Archaeological Survey of India বা ASI)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষাচিন্তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল প্রকৃতির মধ্যে থেকে শিক্ষা। তার জন্য আশ্রম চত্বরের রুক্ষ লাল মাটিকে সবুজ করে তোলা হয়েছিল। লাগানো হয়ে ছিল দেশবিদেশ থেকে আনা বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আর তার মধ্যে তৈরী করা হয়ে ছিল একাধিক স্থাপত্য।
ঘণ্টাতলা
পাঠভবন চত্বরে ঘণ্টাতলা এদের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য। সারনাথের প্রবেশদারের শিল্পরীতিতে এটি তৈরি করা হয়ে ছিল। ২০২০ সালে প্রচন্ড ঝড়ে এই ঘণ্টাতলার উপর একটি বট গাছ ভেঙে পড়ে। এবং ঘণ্টাতলাটি সম্পূর্ন ভেঙে যায়। সেই ঘণ্টাতলা নতুন করে তৈরি শুরু করল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ। আশ্রম চত্তরে দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে অন্যতম ঘণ্টাতলা।
লেডি রানু মুখার্জির দান
বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University) সূত্রে জানা যায়, ১৯১৯ সালে লেডি রানু মুখার্জি তাঁর পাওয়া ছাত্রবৃত্তির ৩০ টাকা শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ে দান করেন। সেই টাকায় সারনাথের প্রবেশদ্বারের শিল্পরীতিতে এই ঘণ্টাতলা তৈরি করা হয়। এর পরিকল্পনা করেছিলেন সুরেন্দ্রনাথ কর। পরে ঘণ্টাটি চুরি হয়ে গেলে ২০০২ সালে ঘণ্টাটি ফের স্থাপিত হয়।
তৈরির ইতিহাস
একটা সময় শান্তিনিকেতন আশ্রমের আশেপাশে কোনও জনবসতি ছিল না। আশ্রমে কিছু ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি থাকতেন শিক্ষকেরা। ছাত্রছাত্রীরা কোনও বিপদে পড়লে ঘণ্টাতলার ঘণ্টা বেজে উঠত। ঘণ্টার আওয়াজ শুনে ছুটে আসতেন গ্রামবাসীরা।
এমন কী এই ঘণ্টার ধ্বনিতেই আশ্রম জীবনের কাজকর্ম নির্বাহিত হত। ঘণ্টাতলার ওপরে থাকা বটগাছের একটা অংশ নীচের দিকে নেমে আসায় ঘণ্টাতলার পরিকাঠামোর ক্ষতি হচ্ছিল। তার পরে ২০২০ সালে ঝড়ে বট গাছটি ভেঙে পড়লে ঘণ্টাতলা সম্পূর্ন ভেঙে পড়ে।
স্বাগত জানালেন আশ্রমিকরা
এই বিষয়ে আশ্রমিক বলেন, এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। শান্তিনিকেতনের পরিবেশ বাঁচাতে স্থাপত্যগুলি রক্ষা করতে হবে। তার সঙ্গে লাগাতে হবে গাছ।
ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদল
চলতি মাসের শেষে বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University)-তে আসতে চলছে ইউনেস্কো (UNESCO)-র একটি প্রতিনিধি দল। এই দল বিশ্বভারতীর ২৩ বাড়ি, স্থাপত্য ঘুরে দেখবে। পরবর্তী সময়ে এই দলের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে এই বাড়ি এবং স্থাপত্যেরে একাংশ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষিত হতে পারে।
আর এই কথা মাথায় রেখে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের নজরদারিতে চলছে সংস্কারের কাজ। সংস্কারের পাশাপাশি যে সব স্থাপত্য ভেঙে পড়েছে, তা নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের ৩০ জনের একটি দল বিশ্বভারতী (Visva-Bharati University)-র বিভিন্ন বাড়ি এবং স্থাপত্য সংস্কারের কাজ করছে। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবরের মধ্যে ইউনেস্কো (UNESCO)-র একটি দল আসতে চলেছে।