একসময় রুপোলি পর্দা রাজ করেছিলেন। এখন কাঁপাচ্ছেন টেলিভিশন। এবার সেই তিনিই যাচ্ছেন সোজা সংসদে। অভিনেত্রীর পাশাপাশি তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ছে 'সাংসদ' তকমা। তিনি হুগলির নতুন 'দিদি' রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি 'দিদি নং ১' হিসাবে জনপ্রিয়তার শিখরে রয়েছেন। একদা সহ-অভিনেত্রী তথা 'বন্ধু' লকেট চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে এবার হুগলিতে বাজিমাত করেছেন রচনা। ৭৬ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতে সংসদে যাচ্ছেন একদা টলিপাড়ার সুপারহিট নায়িকা। জয়ের পরের দিন সাতসকালে ফোনের ওপারে খোশমেজাজে bangla.aajtak.in-এর সঙ্গে ফোনে আড্ডা দিলেন হবু সাংসদ। ফোন করতেই প্রশ্ন শুনে রচনা বললেন, 'এবার বলো'....
জয় নিয়ে কী বলবেন?
রচনা: দেখো, এটা একার জয় নয়। আমার জয় তো বটেই। এটা তৃণমূলের জয়। সবথেকে আনন্দের কথা সেটা। এরকম রেকর্ড ব্রেকিং জয়। অবিশ্বাস্য। আমরা সবাই ভীষণ খুশি। মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবথেকে খুশি।
আপনার ধোঁয়া-মিষ্টি দই মন্তব্য বিতর্ক হয়েছিল... (প্রশ্ন শেষ না হতেই)
রচনা: যারা এগুলো করে তাদের কোনও কাজকর্ম নেই। প্রচারে নেই। কোনও একটা কিছু করতে হবে বলে করেছি। এটা নিয়ে আমি কখনও রিয়্যাক্ট করিনি। এটা তাদের রোজকারের ব্যাপার। রচনা ব্যানার্জি নতুন এসেছে, লকেটকে নিয়ে মিম করে তো লাভ নেই। সে পুরনো। তাই রচনাকে নিয়ে মিম করেছে।
লকেটকে কী বলবেন? কিছু বার্তা দেবেন?
রচনা: নাগো, কিছু বার্তা দেওয়ার নেই। ও অনেক সিনিয়র পলিটিশিয়ান। অভিজ্ঞ মানুষ। আমি তো নতুন মানুষ। কিছু জানি না। ও জীবনে অনেক কিছু করতে পারবে। আরও বড় হবে। আরও ভাল করবে। অনেক কিছু করতে পারবে। কারণ ও কাজটা ভাল জানে। সেন্ট্রালে যারা রয়েছে, ও তাদের লোক। ফলে ওর জীবনটা অনেক সুন্দর হবে। ভাল হোক ওর জীবনে।
হুগলির জন্য সাংসদ হিসাবে প্রথম কী কাজ করবেন?
রচনা: দেখো, এটা বসে আলোচনাসাপেক্ষ। এখনও কাজ ঢুকিনি আমি। কাজে ঢুকে আমায় বুঝতে হবে, কোনটা তাঁদের জন্য ফার্স্ট প্রায়োরিটি, কোনটা করলে মানুষের ভাল হয়। কাজ তো অবশ্যই হবে। কোনটা করলে মানুষ সবথেকে বেশি উপকৃত হবেন।
মমতা-অভিষেকের সঙ্গে জয়ের পর কথা হল?
রচনা: হ্যাঁ, কথা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে। অভিষেকের সঙ্গে কথা হয়েছে।
কী বললেন?
রচনা: বললেন, তুমি জয়ী হবে (রচনার মুখে হাসি)। তোমায় তো বলেই দিয়েছিলাম তুমি জয়ী হবে। টেনশন করছিলে। দিদির আসলে কনফিডেন্স ছিল যে জিতব।
পরিবারের সদস্যরা কী বলছেন? বিশেষত স্বামী?
রচনা: স্বামী প্রচুর খেটেছে। আমার এক দাদাও প্রচুর খেটেছেন। অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তারা যদি না থাকতো, তা হলে সম্ভব হত না। দু'জনে মিলে সবসময় কাজ করে গিয়েছে।
মা সাংসদ হলেন, ছেলে কী বলছে?
রচনা: ও খুশি হয়েছে। সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছে। খুশি ও। ও খুব ইন্ট্রোভার্ট। একটু চাপা। আমায় কনগ্রেচুলেট করেছে।
একটা সময় স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। ভোটের প্রচারে স্বামীকে সবসময় পাশে পেয়েছেন। স্বামীর সঙ্গে কি দূরত্ব ঘুচল?
রচনা: উই আর অলওয়েজ ভেরি গুড ফ্রেন্ডস। আমরা হয়তো একসঙ্গে থাকি না। আমরা কিন্তু বরাবরই ভাল বন্ধু। আমরা দেখেছিলাম, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটা রাখলে সম্পর্কটা ভাল থাকছে। এটা আরও একবার প্রমাণিত। আজ যখন একটা কাজে নেমেছি, সে আমার পাশে থেকেছে। সেটা আরও একবার প্রমাণিত যে,আমরা ভাল বন্ধু। হতে পারে একসঙ্গে থাকলে খটাখটি লাগে। বন্ধু হিসাবে থাকল অনেক বেটার থাকা যায়। সেটা আবার প্রমাণিত হল যে, স্বামী-স্ত্রী ভাল বন্ধু হতে পারে। আমার পাশে দাঁড়িয়েছে ও, খুবই থ্যাঙ্কফুল। তার যখন কোনও প্রয়োজন হবে, অবশ্যই আমিও পাশে থাকব।
আপনার প্রাক্তন এবং একদা হিরো সিদ্ধান্তও ওড়িশায় বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে জয়ী। কী বলবেন?
রচনা: ওঁকে অনেক শুভেচ্ছা, অভিনন্দন আমার থেকে।
দিদি নং ১-এ কতটা সময় দিতে পারবেন সাংসদ রচনা?
রচনা: দেখো, দিদি নং ১ তো চলবেই। আগেও ছিল, এখনও থাকবে। মনে হয় না কোনও সমস্যা হবে। সময় ম্যানেজ করতে পারলে সব হবে।
টলিপাড়া থেকে কারও শুভেচ্ছাবার্তা পেলেন? আপনার নায়ক প্রসেনজিৎ কিছু বললেন?
রচনা: না, এখনও পর্যন্ত শুভেচ্ছা আসেনি। বুম্বাদার সঙ্গে এখনও কথা হয়নি।