একুশের ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। এবারের ভোটে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে তা বোঝার জন্য রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই। তবে এবার ভোটের আগে তৃণমূল ও বিজেপির লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে গ্ল্যামার দুনিয়াতেও। এককথায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে দুই শিবিরের। এক পক্ষ টলিউডের কোন তারকাকে দলে যোগ করাচ্ছে তো পরের দিন অপর পক্ষ দলীয় পতাকা হাতে তুলে দিচ্ছে আরেক তারকাকে।
তবে সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যে মূলস্রোতের তারকা-যোগের ক্ষেত্রে তৃণমূলই পথিকৃৎ। গত প্রতিটি ভোটেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টলিউডের নায়ক-নায়িকাদের বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটে দাঁড় করাতে দেখা গেছে। তাঁরা জিতেওছেন। তৃণমূলের টিকিটে জিতেই সাংসদ হয়েছেন শতাব্দী রায়, দেব, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহানের মতো তারকারা। তৃণমূলের বিধায়ক এবং সাংসদ ছিলেন প্রয়াত তাপস পালও।সাংসদ ছিলেন সন্ধ্যা রায় এবং মুনমুন সেন।
তবে বিজেপি-তে তারকা-নির্ভরতা এ বারেই বেশি। তৃণমূলকে প্রতিটি ক্ষেত্রে সমান তালে পাল্লা দিতে এবার টলিউডের দিকে নজর দিয়েছে গেরুয়া শিবির। গত কয়েকদিনে টলিউডের একঝাঁক প্রথম সারির তারকাকে দেখা গেছে বিজেপির পতাকা হাতে নিতে। জল্পনা বাড়ছে এবারের বিধানসভায় ভোটে লড়তে দেখা যেকে পারে এইসব তারকাদের। একনজরে দেখে নেওয়া যাক একুশের লড়াইয়ে দুই শিবিরের তারকাদের।
সাম্প্রতিককালে যে সকল তারকারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। সায়নী নিজে দলে যোগ দিয়ে বলেছেন, মহিলাদের সম্মান রক্ষা করতে হলে তৃণমূলের বিকল্প কেউ নেই৷
তৃণমূলের আরেক পরিচিত মুখ অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী। সোহম অবশ্য আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। ২০১৬ সালে বাঁকুড়ার বড়জোড়া বিধানসভায় তাঁকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। সামান্য কিছু ভোটের ব্যবধানে সেবার হেরে যান সোহম।
তৃণমূল শিবিরে নাম লিখিয়েছেন পরিচালক সুদেষ্ণা রায়।
তৃণমূলের যোগ দিয়েছেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী এবং অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকও।
'বাহা' ওরফে রণিতা দাস এবং জুন মালিয়াও পরিচিত মুখ। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের বিভিন্ন সভা-মিছিলে দেখা যায় জুনকে।
কয়েকদিন আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন কৌশানি মুখোপাধ্যায়।
বুধবার সকালে তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলীয় পতাকা হাতে নিলেন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ বছর হল দিদির পাশে তিনি আছেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
ক’দিন আগে ভোটের মুখে জল্পনা বাড়িয়ে দলনেত্রীর কাছে অব্যাহতি চেয়েছিলেন বারাসাতের তৃণমূল অভিনেতা বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। তবে বারাসাত হাসপাতালে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে, রাজনীতির মূলস্রোতে থাকারই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তবে এবার রায়দিঘির বিধায়ক দেবশ্রী রায়কে নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট নয় দল।
গত বিধানসভা ভোটে ক্রিকেট দুনিয়া থেকে আসা লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে প্রার্থী করে চমকে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। এবার লক্ষ্মী রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছেন। তবে দলে নতুন সংযোজন আরেক ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি।
বরাবরই মমতা বন্দোপাধ্যায় তারকা প্রার্থীদের ভোটের ময়দানে আনেন। এবারও তাই তৃণমূলের হয়ে টলিউড থেকে কারা কারা ভোটে লড়ার টিকিট পাচ্ছেন তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে সকলের।
এবার অবশ্য আগ্রহ রয়েছে বিজেপির তারকাদের নিয়েও। তৃণমূলের পাশাপাশি টালিগঞ্জের তারকাদের ভিড়ে এবার নজর কেড়েছে বিজেপিও।
দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ।
গত সোমবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।
গেরুয়া শিবিরের নাম লিখিয়েছেন অভিনেত্রী পায়েল সরকারও।
টলিউডের অন্যতম অভিনতো যশ দাশগুপ্তও সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
পাপিয়া অধিকারী, সৌমিলী বিশ্বাস সহ একাধিক টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন।
তৃণমূল থেকে গেরুয়া শিবিরে গিয়েছেন অভিনেতা হিরণও।
তৃণমূল যেমন মনোজ তিওয়ারিকে দলে নিয়েছএ তেমনি ভোট ময়দানে বিজেপির ঘোড়া ক্রিকেটার অশোক দিন্দা। শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন দিন্দা।
ভোট ময়দানে টালিগঞ্জও এখন কার্যত আড়াআড়ি বিভক্ত!