আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে খুব একটা স্বস্তিতে নেই তৃণমূলনেত্রী। প্রতিদিনই আসছে দলবদলের খবর। ছেড়ে চলে যাচ্ছে পুরনো বিশ্বস্ত সঙ্গীরা। এই আবহে অবশ্য তৃণমূলনেত্রীর পাশে রয়েছে মহিলা ব্রিগেড। যারা নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলন থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সবেতেই নেত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধী পক্ষের দিকে। একুশের ভোটে এই প্রমিলা বাহিনীই হতে চলেছে তৃণমূলনেত্রীর সবচেয়ে বড় বল ভরসা।
নুসরত (Nusrat Jahan) - ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে নুসরতকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মান রেখেছেন অভিনেত্রী। বসিরহাট কেন্দ্র থেকে সায়ন্তন বসুর মত প্রার্থীকে পরাজিত করে সাংসদ হয়েছেন নুসরত। নিজের ব্যস্তি কেরিয়ার সামলেও কিন্তু নায়িকা রাজনীতির ময়দানে নিয়মিত অ্যাকটিভ। ভোটের আগে নানা ইস্যুতে গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ শানাতে দেখা যাচ্ছে টলিউডের এই স্বনামধন্য অভিনেত্রীকে।
মিমি (Mimi Chakraborty) - নুসরতের মত মিমিকেও ভোট ময়দানে নামিয়ে চমক দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। যাদবপুর কেন্দ্রে বিকাশ ভট্টাচার্যের মত দুঁদে প্রার্থীকে হারান মিমির রাজনৈতিক কেরিয়ারের অন্যতম মাইলস্টোন। তবে টলি পাড়ার ব্যস্ত অভিনেত্রী সিনেমার সেট থেকে রাজনীতি দু'টোই সামলাচ্ছেন সমান দক্ষতায়। কয়েকদিন আগে নেতাজি জয়ন্তীর সরকারি অনুষ্ঠানে ভিক্টোরিয়াকে দূষিত করার জন্য বিজেপি শিবিরকে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছিল যাদবপুরের অভিনেত্রী এই সাংসদকে।
মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)- ২০০৮ সালে জেপি মরগানের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে মহুয়া রাজনীতিতে এসেছিলেন কংগ্রেসের হাত ধরে। ২০১০ সালে কংগ্রেস ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান। ২০১৯ সালে কৃষ্ণনগর থেকে সাংসদ হন। তৃণমূলনেত্রীর হয় নিয়মিত গেরুয়া শিবিরকে নানা ইস্যুতে তোপ দাগতে দেখা যায় মহুয়াকে।
কাকলি ঘোষ দস্তিদার (Kakoli Ghosh Dastidar)- পেশায় চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দস্তিদার তৃণমূল নেত্রীর পথ চলার দীর্ঘ দিনের সঙ্গী। ভোট ময়দানে দলের হয়ে প্রচারে প্রথমের সারিতে রয়েছেন কাকলি। নিয়মিত বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বাকযুদ্ধে নামতে দেখা যায় কাকলিকে।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য- পেশায় আইনজীবী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য। ভোটের আগে বিহারগত ইস্যুতে বিজেপি নেতাদের নিয়মিত বিঁধছেন চন্দ্রিমা।
শশী পাঁজা- রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহিলা ব্রিগেডের অন্যতম সদস্য। অজিত পাঁজার পুত্রবধূ রাজনীতির ময়দানে যথেষ্ট পোড় খাওয়া। সম্প্রতি রেল প্রকল্পে বাংলার বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের প্রতি সোচ্চার হন শশী।
শতাব্দী রায়- ২০০৯ সাল থেকে তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হয়ে আসছেন। মাঝখানে একটু বেসুরো বাজলেও তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি হওয়ার পরেই প্রকাশ্য জনসভায় বিজেপিকে মাওবাদীদের থেকেও ভয়ঙ্কর বলে আক্রমণ শানাতে দেখা গেছে শতাব্দীকে।
সুজাতা মণ্ডল (Sujata Mandal)- গত ডিসেম্বরেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিজেপির বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁর স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। দলে যোগ দিয়েই রীতিমত বিজেপিকে গুছিয়ে আক্রমণ শুরু করেছেন সুজাতা। এমনকি শুভেন্দু অধিকারীর জামানত জব্দ করার খোলা চ্যালেঞ্জও দিয়ে রেখেছেন সুজাতা।
দোলা সেন (Dola Sen)- তৃণমূলের রাজ্য়সভার সাংসদ দোলা সেনই ২০১৯ সল্টলেকের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন ওয়াশিং পাউডার নিরমা। রাজ্যের শ্রমজীবি ভোটকে দলের দিকে আনতে নেত্রীর অন্যতম বলভরসা এই দোলা সেন।
নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়- সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের রাজ্যস্তরের মুখপাত্র। তিনিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহিলা ব্রিগেডের অন্যতম সদস্য় তা বলাই বাহুল্য।