তৃণমূলনেত্রীর প্রচারের ওপর ২৪ ঘণ্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। এই নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপরেই কমিশনের নোটিস পান বিজেপির রাজ্য সভাপতি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিসের জবাব চাওয়া হয় দিলীপ ঘোষের মধ্যে। তবে সেই জবাবের পরেও মিলল না ছাড়। ২৪ ঘণ্টার জন্য দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন।
শোকজ নোটিসও পান দিলীপ
শীতলকুচিকাণ্ডে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দিলীপ ঘোষকে গত মঙ্গলবার শোকজ করেছিল নির্বাচন কমিশন। বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে রাজ্য় বিজেপি সভাপতিকে জবাবদিহি করতে বলেছিল কমিশন। ১০ এপ্রিল বাংলায় চতুর্থ দফার ভোট ছিল। সেদিন কোচবিহারের শীতলকুচিতে সিআরপিএফ-এর গুলিতে নিহত হন চার ভোটার। কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর উপর এই মৃত্যুর দায় চাপান তৃণমূল নেত্রী। এরপর দিনই গত ১১ এপ্রিল ‘বিদ্বেষমূলক’ মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। রীতিমতো হুমকির সুরে তিনি বলেছিলেন, ‘জায়গায় জায়গায় শীতলকুচিব হবে’। দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ করে তৃণমূল। তার প্রেক্ষিতেই রাজ্য বিজেপি সবাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল কমিশন।
কী বলেছিলেন দিলীপ ঘোষ?
গত রবিবার বরানগরে বিজেপি প্রার্থী পার্নো মিত্রের হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই তিনি বলেন, ‘অভিযোগ করলেই দিদি বলেন দুষ্টু ছেলে। আরে বাবা এত দুষ্টু ছেলে এল কোথা থেকে? ওই দুষ্টু ছেলেরাই গতকাল কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি খেয়েছে। এই দুষ্টু ছেলেরা আর বাংলায় থাকবে না। সবে শুরু। যারা ভেবেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী বন্দুকটা দেখোনার জন্য নিয়ে এসেছে, তারা বুঝে গিয়েছে ওই গুলির গরম কেমন। সারা বাংলায় এটা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করার দিন চলে গিয়েছে। ভয় উপেক্ষা করে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। ১৭ তারিখ সকালেও লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিন। বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না। আমরা আছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করে, শীতলকুচিতে দেখেছেন কী হয়েছে। জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’
মমতা-রাহুলের পর নিষেধাজ্ঞা দিলীপের ওপর
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বিজেপি রাজ্য সভাপতির উপর ২৪ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল সিনহার পর দিলীপ ঘোষ তৃতীয় রাজনীতিক যার ওপর এবারের ভোটে নিষেধাজ্ঞা জারি হল। কমিশন সূত্রে খবর, ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭ টা থেকে ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকছে। পাশাপাশি কমিশন দিলীপ ঘোষকে সতর্কও করেছে।
দিলীপরে রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় কমিশন
গত মঙ্গলবার নোটিস পেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তার জবাব জেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। তবে দিলীপের জবাব সন্তুষ্ট করতে পারেনি কমিশনকে। কমিশন পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, দিলীপ ঘোষের কিছু মন্তব্য উত্তেজক ও প্ররোচনামূলক। আইনশৃ্ঙ্খলা পরিস্থিতি ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর তা নেচিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সেই কারণেই আচরণ বিধির ধারা অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হল।