সামনেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। দিন ঘোষণা না হলেও ময়দানে নেমে পড়েছে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি। এবারের ভোট প্রেস্টিজ ইস্যু তৃমমূলনেত্রীর কাছে। বিধানসভা ভোটে মমতার জয়ের হ্যাটট্রিক হবে কিনা তা নিয়ে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণে নেমে পড়েছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দলের পুরনো কর্মীরা যখন একের পর এক ছেড়ে চলেছেন তৃণমূলনেত্রীকে তখন একাই কুম্ভ হয়ে রাজ্যের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মাঝেই দেশের একনম্বর মিডিয়া ব্র্যান্ড ইন্ডিয়া টুডে ও আজতকের মুখোমুখি হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাইয়ের সামনে দেশের কৃষক আন্দোলন থেকে কৃষি বিল, নেতাজি জয়ন্তী সবকিছু নিয়েই নিজের মতামত জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এর মাঝেই উঠে এলে হিন্দুত্বের প্রশ্ন। যা নিয়ে খোলাখুলি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
তৃণমলনেত্রীর বিরুদ্ধে বারবার সংখ্যালঘু তোষনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ভিক্টোরিয়ায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে জয় শ্রীরাম শুনে তাঁর বক্তৃতা না দেওয়া নিয়ে এখন রাজনীতির ময়দানে জোর চর্চা চলছে। বিশেষ সম্প্রদায়কে খুশি করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন কাজ করেছেন বলে গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতৃত্ব দাবি করছে। এই নিয়েই আজতক-ইন্ডিয়া টুডের সামনে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন তিনি হিন্দু। বললেন, 'ভগবান রামচন্দ্র দুর্গার পুজো করতেন, তিনিও করেন।' হিন্দুত্ব নিয়ে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিতর্কে অংশ নেওয়ার চ্যালেঞ্জও দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
হিন্দুত্ব নিয়ে বিতর্কে প্রস্তুত
সাংবাদিক রাজদীপ সরদেশাইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দুত্ব ইস্যুতে সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'রাম কাকে পুজো করেছিলেন, দুর্গার! এবং আমি দুর্গার পুজো করি। আমিও হিন্দু। আমি অমিত শাহের সাথে হিন্দুধর্ম নিয়ে বিতর্ক করতে প্রস্তুত।
নিশানায় অমিত শাহ
কৃষি আইন তৈরির রাজ্যগুলির সঙ্গে পরামর্শ করেনি কেন্দ্র। ভারতের মত গমতান্ত্রিক দেশে এক রাষ্ট্র এক পার্টি হতে পারে না। মমতা সাফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনপ্রিয়তা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই তবে ওয়ান ম্যান শোয়ের মত দেশ চালানো সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী কেবল বিজেপির নেতা নন, তিনিই সকলের নেতা। মমতা বলেন যে তিনি বাংলায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চান।
রাজ্যপাল নিয়েও মুখ খুললেন
পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী এর মধ্যে প্রায়শই মতপার্থক্য দেখা গিয়েছে। এই সাক্ষাফকারে মমতা বলেন যে রাজ্যপালের প্রতি তাঁর সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে, তবে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উপরে নন।
কৃষি আইন সম্পর্কে বক্তব্য
কৃষি আইন সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর উচিত সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে এই আইনগুলি প্রত্যাহার করা। তাঁর প্রশ্ন, কৃষকদের এমএসপি কে দেবে ? এই দেশটি কি একজন মানুষের জন্য নাকি সবার জন্য? মমতা আরও বলেছিলেন যে মানুষকে হত্যা করার জন্য আপনি (বিজেপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। রাজীব গান্ধীরও শক্তিশালী সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। প্রতিদিন তিনি এক জাতি, এক রাজনৈতিক দলের কথা বলতেন। ভারত সরকারকে কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে।
নেতাজি জয়ন্তী নিয়ে অবস্থান
ভিক্টোরিয়ায় নেতাজি জয়ন্তী নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী বলেম, 'পরক্রম দিবস' নিয়ে বাংলার সরকারের সাথে কোনও কথা হয়নি কেন্দ্রের। ভিক্টোরিয়া নেতাজির উপরে যে কর্মসূচি হয়েছিল তা সরকারি অনুষ্ঠান। অথচ সেখানে রাজনৈতিক স্লোগান তোলা হয়েছিল। আমাপ আপত্তি জানানোর পরেও সেখানে ছিলাম, কর্মসূচি থেকে ফিরে আসিনি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকেও এনিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করিনি।