বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর মঙ্গলবারই প্রথম নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে পা রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও দলবদলের আগেই বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু। তাও নন্দীগ্রাম মানেই যেন শুভেন্দুর আধিপত্য। কিন্তু নিজের গড়ে পা রাখার আগেই এদিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বিজেপির অভিযোগ তাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তৃণমূলনেতা-সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। আর তাকে কেন্দ্র করেই তেতে ওঠে এলাকা। অভিযোগ, শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। সোনাচূড়া ও গোপালনগর থেকে আসার পথে, ভূতার মোড়ে বিজেপি কর্মীদের উপর এই হামলা চালায় তৃণমূল । শুভেন্দুর দাবি, এই ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ভাঙচুর করা হয়েছে ২টি বাস। বিজেপি দাবি করেছে, হামলার পর থেকেই তাদের বেশ কয়েকজন কর্মীর খোঁজ মিলছে না। হুঁশিয়ারির সুরে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, এর ফল ভুগতে হবে। আহতদের তিন জনের তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে এই ঘটনার পর রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছয় নন্দীগ্রামে। এই ঘটনার পরেই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে নন্দীগ্রাম থানা ঘেরাও করা হয়। ইতিমধ্যে হামলার ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের তৃণমূল সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান, তৃণমূল নেতা শাহাবুদ্দিন সহ ১৭ জনের নামে নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে বুধবার দুপুর দু'টোয় থানা ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন হিন্দু সনাতন ধর্মের সভাপতি পবিত্র কর।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এদিনই প্রথম নন্দীগ্রামে পা রাখলেন শুভেন্দু অধিকারী। অরাজনৈতিক কর্মসূচিতে টেঙ্গুয়া থেকে নন্দীগ্রাম বাজারের কাছে জানকীনাথ মন্দির পর্যন্ত পদযাত্রা করেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক। মন্দিরের পুজোয় যোগও দেন তিনি। এদিকে গত ২৩ ডিসেম্বর তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর। সেদিন কাঁথিতে তৃণমূলের সভার আগে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্য়ে সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন জখমও হন। শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়ার পর সেদিনই প্রথম কাঁথিতে জনসভা ছিল তাঁর পুরনো দলের। সেই সভার আগে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছিল এলাকায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, সেদিন রামনগর রোডে তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বিজেপি কর্মীদের মিছিল যাওয়ার সময়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বিজেপির অভিযোগ ছিল , তাদের দলীয় কর্মীদের উপর বিনা প্ররোচনায় হামলা চালিয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। এ অভিযোগ নাকচ করে তৃণমূলের পাল্টা দাবি ছিল, দলের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বিজেপি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের দিন যতই কাছে আসবে ততই জেলায় জেলায় শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে এমন সংঘর্ষের ঘটনা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞমহল।