
উত্তরবঙ্গে চা বিখ্যাত। কিন্তু তার পাশে আরও একটি পণ্য রয়েছে যা স্বাদে এবং রফতানিতে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিকে আরও মজবুত করে চলেছে। সেটি আনারস। প্রতি বছর উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও আশেপাশের জেলাগুলিতে আনারসের প্রচুর ফলন হয়। তা বিভিন্ন জায়গায় রফতানিও করা হয়। পাহাড়ের রানী হিসাবে বিখ্যাত দার্জিলিংয়ে আনারসের বেশি উৎপাদন হয়। উত্তরবঙ্গ জেলাগুলিতে প্রতি বছর প্রায় ৬ লক্ষ মেট্রিক টন আনারস উৎপাদিত হয়। পাইন অ্যাপল মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিসংখ্যান অনুসারে, আনারসের টার্নওভার বার্ষিক প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা।
উত্তরবঙ্গে লাভ হচ্ছে আনারস ব্যবসায়
উত্তরবঙ্গের আনারস দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। আনারস ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের মতে, এই ফলটি উত্তরবঙ্গ থেকে প্রতিবেশী নেপাল এবং বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে রফতানি করা হয়। স্থানীয় বাজারেও আনারসের অনেক চাহিদা রয়েছে। নেপালের সঙ্গে গত বছর বিরোধের জেরে আনারস রফতানিতেও প্রভাব ফেলে। মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন এই প্রতিবেশী দেশে রফতানি বন্ধ করে দেয়। উত্তরবঙ্গের চা বিখ্যাত। কিন্তু শিলিগুড়িতে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে নজরে আসবে আনারসের শরবতের দোকান। এখন সেই দোকানের পরিমাণ খুব বেড়েছে সংখ্যায়।
নির্বাচনী ইস্যুতে আনারসের গুরুত্ব
উত্তরবঙ্গে ১২ মাস ধরে এটি চাষ করা হয়। পরিসংখ্যান অনুসারে উত্তরবঙ্গে ২০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আনারসের চাষ হয়। আনারস চাষের সাথে প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষভাবে প্রায় এক লাখ মানুষ যুক্ত রয়েছেন। উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব রয়েছে আনারস ব্যবসায়। এখানে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আনারস চাষকে দেখা হয়। কৃষকদের দাবি মেনে রাজ্য সরকার শিলিগুড়ির বিধাননগরে একটি আনারস উন্নয়ন ও গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করেছে। আনারসের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সুদীপ্ত সরকার বলেন, আনারসের উৎপাদন আরও বাড়ানোর দরকার রয়েছে। কিন্তু ভোট আসলে চা নিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আসতে থাকে একের পর এক প্রতিশ্রুতি। কিন্তু আনারস ফলনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এখানে। সেটিকে কেউ ইস্যু করে না। তাদের দাবি, চায়ের পাশাপাশি আনারসও এখানকার রাজনীতিতে ছাপ ফেলবে।