ফ্যাক্ট চেক: অমিতাভ বচ্চন ও রেখার গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে ভুয়ো পোস্ট 

এই ছবিগুলি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "বচ্চন পরিবারের উপর মর্মান্তিক আঘাত: ৭৫% লিভারের ক্ষতি, অমিতাভ বচ্চনকে দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে—অবস্থা সংকটজনক, কিংবদন্তির জন্য জাতি প্রার্থনা করছে!! এটা কি শুধুই কাকতালীয় ঘটনা!একদিকে রেখা লড়ছেন হার্ট অ্যাটাক এ। অন্য দিকে অমিতাভ বচ্চন আশঙ্কা জনক অবস্থায় হাসপাতালে।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে দাবিটি পুরোপুরি ভুয়ো। অমিতাভ বচ্চন এবং রেখা, দুজনেরই স্বাস্থ্য অবনতির দাবিটি ভিত্তিহীন এবং কোনও প্রমাণ ছাড়াই এই দাবি করা হচ্ছে। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে 

যদি অমিতাভ বচ্চন বা রেখার মতো বলিউড সেলিব্রিটিদের স্বাস্থ্যজনিত কোনও সমস্যা হয়ে থাকতো, বা তাঁরা অসুস্থ হতেন, তবে নিশ্চিতভাবে সেই নিয়ে খবর প্রকাশ পেতো। কারণ এই ধরনের তারকাদের প্রত্যেকটি ছোট-বড় কার্যক্রম নিয়েই খবর হয়। কিন্তু এই ধরনের কোনও খবর কোথাও পাওয়া যায়নি, যা থেকে প্রমাণ হয় যে এই দাবির কোনও সত্যতা রয়েছে। 

পোস্টে থাকা ছবিগুলি একে একে গুগল লেন্স ও রিভার্স সার্চের মাধ্যমে খোঁজা হলে এর মধ্যে বেশ এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ছবির আসল সূত্র পাওয়া যায় যা থেকে আরও পরিষ্কার হয়ে যায় যে এগুলোর সঙ্গে অমিতাভ বচ্চনের স্বাস্থ্যজনিত শঙ্কার কোনও সম্পর্ক নেই। 

যেমন দ্বিতীয় ছবিতে সবুজ পোশাক গায়ে পরে থাকা এক ব্যক্তিকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অপর এক ব্যক্তির হাত ধরে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু ওই ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চের সাহায্যে খোঁজা হলে ২০২৪ সালের ৩১ অগস্টের একটি ফেসবুক পোস্টে ওই একই ছবি পাওয়া যায়। সেই ছবিতে থাকা ব্যক্তির চেহারা ছিল অন্য। যা ভাইরাল পোস্টে বদলে অমিতাভের মুখের আদলে করে দেওয়া হয়েছিল। 

আবার ভাইরাল পোস্টে জয়া বচ্চনের একটি ক্রন্দনরত ছবি দেখা যাচ্ছে। ওই দৃশ্য NDTV-র একটি ভিডিও প্রতিবেদনে পাওয়া যায়। ভিডিওটি ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বরের ছিল। যেখানে জয়া বচ্চন দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ড নিয়ে কথা বলছিলেন। সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে নির্ভয়াকাণ্ডের নির্যাতিতার মৃত্যু পর তিনি ক্য়ামেরার সামনে ভেঙে পড়েছিলেন। 

অন্য়দিকে, এই প্রতিবেদন লেখার সময়ের ঠিক ১৭ ঘন্টা আগেই অমিতাভ বচ্চন বিশ্ব পরিবেশ দিবস নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেছিলেন। আর ভাইরাল পোস্টও প্রকাশ পেয়েছিল ওই সময় নাগাদ। 

ফলে সবমিলিয়ে বলাই চলে, একটি ভুয়ো দাবি কতগুলি ভুয়ো ছবি ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।