Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: মালদা কলেজে ছাত্রীকে প্রকাশ্যে খুন যুবকের? না, ভিডিওটি বলিভিয়ার

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি মালদা কলেজের নয়। এমনকি এই ঘটনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের কোনও সম্পর্ক নেই। ভিডিওটি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ায় তোলা হয়।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 22 Jan 2025,
  • अपडेटेड 1:36 PM IST

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে একটি ক্লাসরুমের মেঝের উপরে এক ছাত্রীকে ফেলে তার পেটে বরংবার ছুরিকাঘাত করতে দেখা যাচ্ছে এক যুবককে। এর ফলস্বরূপ মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাশাপাশি এই দৃশ্য দেখে ক্লাসের অন্যান্য পড়ুয়াদের ছোটাছুটি ও চিৎকার করতেও দেখা যাচ্ছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার মালদা কলেজে ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে সেটির ফ্রেমের উপরে লিখেছেন, “মালদা কলেজ (Malda Kolej)।”

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি মালদা কলেজের নয়। এমনকি এই ঘটনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের কোনও সম্পর্ক নেই। ভিডিওটি ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ায় তোলা হয়।

আরও পড়ুন

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল পর্যবেক্ষণ করার সময় সেটির কমেন্ট সেকশনে আমরা একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীকে ঘটনাটিকে মালদা কলেজের নয় বলে উল্লেখ করতে দেখতে পাই। বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভাইরাল ভিডিও থেকে একাধিক স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে সেগুলি গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে Seegore নামক একটি ওয়েবসাইটে এই একই ভিডিও-সহ একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে ভাইরাল ভিডিওর ঘটনাটি বলিভিয়ার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু Seegore নামক ওয়েবসাইটে এই ধরনের হিংসাত্মকমূলক ভিডিও আপলোড করা হয় এবং সেই সব ভিডিওর দৃশ্য আপনাকে বিচলিত করতে পারে তাই আমরা প্রতিবেদনটি হাইপারলিঙ্ক করলাম না। বরং আমরা প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট নিচে ব্য়বহার করেছি।

পাশাপাশি প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর বলিভিয়ার লা পাজের কারানাভির একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের (টিচার ট্রেনিং স্কুলে) ক্লাসরুমের ভিতরে ২৩ বছর বয়সী কামিলা জাঙ্গা নামক এক ছাত্রীকে খুন করে তারই সহপাঠী তথা প্রাক্তন সঙ্গী মার্কোস। ঘটনাস্থলে উপস্থিত তার অন্যান্য সহপাঠীদের মধ্যে একজন নিজের ক্যামেরায় গোটা বিষয়টি রেকর্ড করে। Livegore নামক একটি পোর্টালেও এই একই ভিডিও এবং তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। 

Advertisement

এরপর উক্ত সূত্র ধরে এই সংক্রান্ত একাধিক কিওয়ার্ড সার্চ করলে ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর বলভিয়া ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘Opinión Bolivia’তে স্প্যানিশ ভাষায় এই সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ২৩ বছর বয়সী কামিলা পাকাসি জাঙ্গা ৫ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তানের মা। তিনি বলভিয়ার লা পাজের কারানাভিতে অবস্থিত সিমন বলিভার টিচার ট্রেনিং স্কুলের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। 

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় কামিলা কলেজের ক্লাসরুমে ঢুকলে তার সহপাঠী তথা প্রাক্তন প্রেমিক মার্কোস ওরফে মার্কো ক্যালে হুয়ানকা তাকে ছুরি দিয়ে খুন করে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মার্কোসকে প্রাথমিকভাবে ৬ মাসের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়ে পুলিশকে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন বিচারক। অন্যদিকে বলভিয়ার রাষ্ট্রপতি ঘটনাটিকে মর্মান্তিক আখ্যা দিয়ে অপরাধীর শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে মালদা কলেজে এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে কিনা সে বিষয়ে জানতে আমরা মালদার ইংরেজ বাজার থানার আইসি সঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “সম্প্রতি মালদা কলেজ তথা মালদার কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও ছাত্রের তরফে কোনও ছাত্রীকে খুন করার ঘটনা ঘটেনি।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে মালদা কলেজের ঘটনা দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ার ভিডিও।

Fact Check

Claim

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের মালদা কলেজে এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যে খুন করছে এক যুবক।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটি মালদা কলেজের নয়। বরং সেটি ২০২৪ সালের ১৫ অক্টোবর দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়ার একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজে তোলা হয়েছিল।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement