সাম্প্রতিক সময়ে লাভ জিহাদ নামক বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন নেটাগরিকরা। এমন একাধিক ঘটনা ঘটার দাবিও উঠেছে নানা সময়ে। তবে এবার এমন একটি পোস্ট ভাইরাল হচ্ছে যেখানে সম্পূর্ণ চমকে দেওয়া একটি দাবি ভাইরাল হচ্ছে।
এই পোস্টে মূলত একটি গ্রাফিক্স কার্ড রয়েছে যেখানে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম যমুনা টিভির লোগো দেখা যাচ্ছে। কার্ডে হাসপাতালে ভর্তি এক যুবকের ছবিও রয়েছে।
গ্রাফিক্স কার্ডটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, অসমের এক হিন্দু যুবক নাকি এক মুসলিম মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সেই সময়ে তাকে গোপনাঙ্গ হারাতে হয়।
এই পোস্টে লেখা হয়েছে, "মুসলিম নারীকে প্রেমের ফাদে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করায় গোপনাঙ্গ হারালেন ভারতের স্বনাতন ধর্মের এক যুবক! ঘটনাটি ঘটে ভারতের আসামে।" (পোস্টের বানান অপরিবর্তিত)
ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল পোস্টটি পুরোপুরি অসত্য।
কীভাবে জানা গেল সত্যি
যেহেতু এই পোস্টে যমুনা টিভির লোগো দেখা যাচ্ছে, তাই সবার প্রথম আমরা কিওয়ার্ড সার্চ করে খোঁজার চেষ্টা করি যমুনা টিভি আদেও এমন কোনও পোস্ট, বা খবর প্রকাশ করেছে কিনা। এমন কিছুই আমাদের নজরে আসেনি।
দ্বিতীয়ত, আরও একটি বিষয় থেকে বোঝা সম্ভব যে এই গ্রাফিক্স কার্ডটি ভুয়ো। এখানে নজর দিলে দেখা যাবে একাধিক বাংলা বানান ভুল। যা সাধারণত কোনও পেশাদার সংবাদ মাধ্যমে হয় না। এখানে ফাঁদ বানানকে 'ফাদ' ও সনাতন বাননকে 'স্বনাতন' লেখা হয়েছে।
এরপর আমরা গ্রাফিক্স কার্ডে থাকা ছবিটির উৎস খুঁজে বের করতে ছবিটি গুগল লেন্স সার্চ করি। তখন ওই একই ছবি দেখা যায় JagoNews 24 নামের আরেকটি বাংলাদেশী সংবাদ মাধ্যমে।
২০২০ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে ছবিটি মালয়শিয়ায় বসবাসকারী এক বাংলাদেশী যুবকের। সেখানে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন বকুল হোসেন নামের ওই যুবক। এরপর তাঁর পরিবার বাংলাদেশ সরকারের কাছে আর্তি জানায় তাঁকে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করার জন্য।
উক্ত বিষয়গুলি থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে সম্পূর্ণ মিথ্যে দাবিতে এই গ্রাফিক্স কার্ড শেয়ার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
মুসলিম নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করতে গিয়ে গোপনাঙ্গ হারালেন এই হিন্দু যুবক। ঘটনা অসমের।
পোস্টকার্ড ও তথ্যটি পুরোপুরি ভুয়ো ও আজগুবি।