Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: রমজান মাসে ভারতে মুসলিমদের নমাজ পড়তে ‘বাধা’ দেওয়ার দাবিতে ছড়াল পুরনো ভিডিও

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে হরিয়ানার গুরুগ্রামে প্রকাশ্যে জুম্মার নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে বিবাদের সময় তোলা হয়েছিল। এর সঙ্গে রমজান মাসের কোনও সম্পর্ক নেই।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 27 Mar 2025,
  • अपडेटेड 3:35 PM IST

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে গলায় গেরুয়া উত্তরীয় জড়ানো কিছু ব্যক্তিকে 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান দিয়ে একটি খোলা জায়গায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের নমাজ পড়তে বাধা দিতে দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ কর্মীরা তাদের থামানোর এবং সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতে এই পবিত্র রমজান মাসেও মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি তাদেরকে নমাজ পড়তে বাধা দেওয়া হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “রমজান মাসেও ভারতে মুসলমানদেরকে নামাজ পড়তে বাধাঁ দেওয়া হচ্ছে করা হচ্ছে নির্যাতন।” (বানান অপরিবর্তিত) 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে হরিয়ানার গুরুগ্রামে প্রকাশ্যে জুম্মার নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে বিবাদের সময়কার। এর সঙ্গে বর্তমানে চলা রমজান মাসের কোনও সম্পর্ক নেই।

আরও পড়ুন

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা এর ফ্রেমে ‘Woke Malayalam’ নামের একটি ওয়াটার মার্ক দেখতে পাই। সেই সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালালে ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর ‘Woke Malayalam’এর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে সেখানে লেখা হয়েছে, “কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভের পরেও গুরুগ্রামে শুক্রবারের নমাজ আদায় করছেন মুসলিমরা। আজ (০৩.১২.২০২১) হরিয়ানার গুরুগ্রাম সেক্টর ৩৭ এলাকায় কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা জয় শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে জুম্মার নমাজ বন্ধ করতে আসে। তবে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।”

সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, “এই ঘটনা নিয়ে টানা তিন সপ্তাহ সরকার-অনুমোদিত স্থানে জুম্মার নমাজ বন্ধ করতে এসেছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠনেগুলি। শুক্রবারের নমাজের পর হিন্দু-মুসলিম শান্তির জন্য দোয়া করেন ইমাম হাজী শাহজাদ খান। অন্যদিকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে আসা প্রায় ৪০ জনকে আটক এবং ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।”

Advertisement

এরপর উক্ত সূত্র ধরে পরবর্তী সার্চ করলে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর এই ঘটনার দুটি ছবি-সহ আল-জাজিরাতে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, টানা দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে এক ঘন্টারও কম সময়ের দূরত্বে অবস্থিত গুরুগ্রামে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির তরফে মুসলিমদের প্রকাশ্যে জুম্মার নামাজ পড়তে বাধা দেওয়া হচ্ছে। গত শুক্রবার পুলিশের সামনেই গুরুগ্রামের সেক্টর ৩৭-এ নামাজের জায়গায় ট্রাক রেখে এবং 'জয় শ্রী রামের' মতো ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে নমাজে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করা হয়।  

ওই প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মসজিদের অভাবের কারণে মুসলিমরা আগে অনুমতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খোলা স্থানে নমাজ পড়ে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিক্ষোভের মুখে প্রশাসন বেশিরভাগ স্থানের অনুমতি বাতিল করে দিয়েছে। তবে মুসলিম কাউন্সিল নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য কোনও জমি পেলে খোলা স্থানে নামাজ পড়া বন্ধ করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে। এই একই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি-র একটি প্রতিবেদনেও। অন্যদিকে স্টক ইমেজের ওয়েবসাইট gettyimages-এও এই ঘটনার একাধিক ছবিও পাওয়া যায়। এখানে উল্লেখ্য ২০২১ সালে রমজান ইংরাজি এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অন্যদিকে ভাইরাল ভিডিওটি ওই বছরের ডিসেম্বর মাসের।

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, প্রকাশ্যে জুম্মার নামাজ পড়াকে কেন্দ্র সৃষ্টি বিক্ষোভের পুরনো ভিডিও চলতি রমজান মাসের সঙ্গে সম্পর্ক জুড়ে প্রচার করা হচ্ছে যা বিভ্রান্তিকর।

Fact Check

Claim

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভারতে এই পবিত্র রমজান মাসেও মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি তাদেরকে নমাজ পড়তে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। বরং ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে হরিয়ানার গুরুগ্রামে প্রকাশ্যে জুম্মার নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে তৈরি বিবাদের সময়কার। এর সঙ্গে রমজান মাসের কোনও সম্পর্ক নেই।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement