Advertisement

আগুনের উপর শুয়ে থাকা সাধুর ভাইরাল ভিডিও কুম্ভ মেলার নয়, জানুন আসল ঘটনা

গেরুয়া বসনে থাকা এক সাধুর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যিনি আগুনের উপর নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে শুয়ে রয়েছেন।

আগুনের উপর শুয়ে থাকা এই সাধুর ভিডিওর রহস্যটা কী?আগুনের উপর শুয়ে থাকা এই সাধুর ভিডিওর রহস্যটা কী?
ঋদ্ধীশ দত্ত
  • কলকাতা,
  • 08 Jan 2022,
  • अपडेटेड 9:17 PM IST

সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু সময়েই নানা অলৌকিক কাণ্ডের বিষয়ে ভাইরাল হয়ে থাকে। এ বার এক সাধুর আগুনের উপর শুয়ে থাকার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের একাংশ লিখছেন, এই ভিডিওটি নাকি কুম্ভ মেলায় তোলা। যেখানে বেশ কিছু সিদ্ধ সাধু নিজেদের মন্ত্রবলে এই কাজটি করে দেখিয়েছেন। 

সঞ্জয় মিশ্র নামের এক ব্যক্তি এই ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে ইংরাজিতে লিখেছেন, "কুম্ভ মেলার খবর করার সময় বিবিসি-র একটি দল দেখতে পান ৪০০ জন সাধু কুম্ভস্নানের আগে নিজেদের দেহ আগুনে অর্পণ করছে। তারা ঘটনাটি ক্যামেরা বন্দি করে রাখে। কাঠের আগুনে শুয়ে থাকার পরও সাধুদের কিছু হচ্ছে না দেখে বিবিসি-র প্রতিনিধিরা চমকে গিয়েছিলেন। কাপড়ে কোনও রাসায়নিক মেশানো রয়েছে কিনা তার পরীক্ষাও তারা করেন, কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি। পরে বিবিসি এটি তাদের চ্যানেলে সম্প্রচার করে।"

আরও পড়ুন

একই দাবি-সব আরও একাধিক ব্যক্তি ফেসবুকে এই পোস্ট করেন। এর আর্কাইভ এখানেএখানে দেখা যাবে। 

ইন্ডিয়া-টুডে অ্যান্টি ফেক-নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভিডিওর সঙ্গে যে বক্তব্য পেশ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। এই ঘটনার সঙ্গে কুম্ভ মেলার কোনও সম্পর্ক নেই। বিবিসি-র কোনও চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়নি। 

ভিডিওটি আসলে কোন ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা বুঝতে সবার প্রথম আমরা ইনভিড টুলে মাধ্যমে ভিডিওটির ভিন্ন-ভিন্ন কি-ফ্রেম সংগ্রহ করি। সেই ছবিগুলি রিভার্স সার্চের মাধ্যমে আমরা ভিডিওটির উৎস সন্ধানের চেষ্টা করি। কিন্তু তাতে কোনও সন্তোষজনক ফল না মেলায় এরপর আমরা কি-ওয়ার্ড সার্চের সাহায্য নেই। 

একাধিক কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে ঘটনা সম্পর্কে সার্চ করা শুরু করলে একাধিক ভিডিও আমাদের সামনে আসে। তার মধ্যে একটি ভিডিওর সঙ্গে ভাইরাল হওয়া ক্লিপটি প্রায় মিলে যায়। যে ভিডিওটির সঙ্গে ভাইরাল ক্লিপটি মিলে যায় তা ২০১১ সালের ২৩ মার্চ আপলোড করা হয়েছিল। "দ্য ফায়ার ইয়োগি ৩" শীর্ষক ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক সাধু গেরুয়া বসন পরে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা কাঠের আগুনের উপর শুয়ে রয়েছেন, কিন্তু তাঁর কিছুই হচ্ছে না। 

Advertisement

সেটিকে সূত্র ধরে এরপর আমরা "দ্য ফায়ার ইয়োগি" সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা করি। কি-ওয়ার্ড সার্চ করে সংস্কৃতি ম্যাগাজিন নামের একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে এই সাধুর সম্পর্কে আমরা আরও তথ্য জানতে পারি। ২০১৫ সালে প্রকাশ পাওয়া এই রিপোর্টে লেখা হয়, আগুনের উপর শুয়ে থাকা এই সাধুর নাম আসলে যোগী রাম্ভুস্বামী। তিনি তামিলনাড়ুর তাঞ্জোরের বাসিন্দা। তাঁর এই অভাবনীয় কাণ্ড নিয়ে ৪৭ মিনিটের একটি তথ্যচিত্রও রয়েছে। 

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে এরপরই আমরা বিখ্যাত অনলাইন শপিং বিপণী অ্যামাজনের ওয়েবসাইটে ওই তথ্যচিত্রটির ডিভিডি দেখতে পাই। ২০০৭ সালে প্রকাশ পাওয়া সেই তথ্যচিত্রের ডিভিডি সেখানে বিক্রি করা হচ্ছিল। যদিও মজার ব্যাপার হল- ভারতীয় অ্যামাজনের ওয়েবসাইট অর্থাৎ Amazon.in-এ তথ্যচিত্রটি বিক্রির জন্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু অ্যামাজনের মার্কিন ওয়েবসাইট, অর্থাৎ Amazon.com-এ সেটি ৩.৪০ ডলারে বিক্রি করা হচ্ছিল। 

অ্যামাজনের ওয়েবসাইটেই ওই তথ্যচিত্রের সম্পর্কে আমরা বিশদে জানতে পারি। সেখানে লেখা ছিল, এই তথ্য-চিত্রটির সঙ্গে ধর্মের কোনও যোগাযোগ নেই এবং ওই সাধু নিজের কাপড়ে কিছু রাসায়নিকও ব্যবহার করেন। 

সুতরাং, ভিডিওটি যে কুম্ভ স্নানের আগে ৪০০ জন সাধুর আগুনে অর্পণের নয়, এবং বিবিসি তা সম্প্রচার করেনি, এ কথা পরিষ্কার করে বলা যায়। 

Fact Check

Claim

কুম্ভ মেলায় বিবিসি-র ক্যামেরায় ধরা পড়ল ৪০০ জন সাধুর আশ্চর্য কীর্তি। পুণ্য স্নান করার আগে তাঁরা অগ্নি দেবতাকে দেহ অর্পণ করলেন। এরা সকলেই সিদ্ধ সাধু। যে কারণে আগুনও তাঁদের কোনও ক্ষতি করতে পারেনি।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটি আসলে "দ্য ফায়ার ইয়োগি" নামক একটি তথ্যচিত্রের অংশ। রম্ভু স্বামী নামে তামিলনাড়ুর এক সাধু ২০০৭ সালে এই তথ্যচিত্রটি প্রকাশ করেন।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement