ফ্যাক্ট চেক: তুরস্ক ইজরায়েলে সামরিক হামলা চালায়নি, মিথ্যে দাবিতে ভাইরাল অসম্পর্কিত ভিডিও

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে সম্প্রতি ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে তুরস্ক। আর এই দৃশ্য সেই হামলার। ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "তুর্কী এইমাত্র হামলা করছে ইজরায়েলের উপর। তুর্কী ঈদের সালামি দিলো ইজরায়েলকে।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে তুরস্ক এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়ায়নি। এই ভিডিওটি দিনতিনেক আগে গাজার এক ত্রাণশিবিরে ইজরায়লি হামলার। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে রিভার্স সার্চের মাধ্যমে খোঁজা হলে ওই একই ভিডিও Roya News English নামের একটি এক্স হ্যান্ডেলে পাওয়া যায়। ৪ জুন ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, ত্রাণপ্রার্থীদের উপর ইজরায়েলের হামলা চালানোর দৃশ্য এটি। 

এই সূত্র ধরে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে ইউরোপ প্যালেস্তাইন নেটওয়ার্ক নামের একটি ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে ওই একই ভিডিও পাওয়া যায়। এই হ্যান্ডেলটি থেকে নিয়মিত ফিলিস্তিন ও হাজার উপর ঘটতে থাকা নানা ধরনের হামলার ভিডিও প্রকাশ করা হয়। এখানে ভিডিওটি প্রকাশ করে ইংরাজিতে যা লেখা হয় তার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, "মধ্যরাতে বিশৃঙ্খলার দৃশ্য। গাজার মধ্যাঞ্চলে নেটজারিম করিডোরে বেসামরিক নাগরিকদের উপর কোয়াডকপ্টার হামলা।"

সাম্প্রতিক সময়ে গাজার নেটজারিম করিডোরে ত্রাণার্তদের উপর কোনও হামলা হয়েছে কিনা জানতে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে আল জাজিরা ইংলিশের একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়। গত ১ জুন এই ভিডিওটি আপলোড করা হয়। এই প্রতিবেদনটি ছিল গাজায় আমেরিকা-সমর্থিত একটি ত্রাণশিবিরে ইজারায়লি হামলার বিষয়ে। 

এই প্রতিবেদনের বিবরণে লেখা হয়, দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় মার্কিন-সমর্থিত একটি গোষ্ঠীর পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ স্থানে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের উপর ইজরায়লি বাহিনী গুলি চালায়। যার ফলে রাফায় কমপক্ষে ৩০ জন এবং নেটজারিম করিডোরের কাছে আরও একজন নিহত হয় এবং কয়েক ডজন আহত হয়। ফলে উক্ত ভিডিওটি যে নেটজারিম করিডোরের হতে পারে, তা আন্দাজ করা হয়। 

তুরস্ক কি ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়েছে? 

তুরস্ক ও ইজরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বরাবরই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল, বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইস্যুতে। তুরস্ক সর্বদা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করে এবং ইজরায়েলের গাজা ও অন্যান্য অঞ্চলে সামরিক অভিযানের সমালোচনা করে এসেছে। তবে এই সমালোচনা বা কূটনৈতিক পদক্ষেপ সরাসরি সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়নি। তুরস্ক সরাসরি ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছে, এমন কোনও তথ্য বা প্রমাণ কোথাও নেই। 

ফলে সবমিলিয়ে বলাই যায় যে বিভ্রান্তিকর দাবিতে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।