Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: ইরানের হামলায় ধুলিস্যাৎ ইজরায়েল দাবিতে ছড়াল অন্য দেশের অসম্পর্কিত সব ভিডিও

ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে ইজরায়েলের বুকে ইরানের বিমান হামলার তথাকথিত দৃশ্য দাবিতে একাধিক ভিডিও। কিন্তু আমরা আমাদের অনুসন্ধানে এমনই তিনটি ভিডিও যাচাই করে দেখেছি যে সেগুলির সঙ্গে ইরান-ইজরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের কোনও সম্পর্ক নেই।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 17 Jun 2025,
  • अपडेटेड 4:40 PM IST

পঞ্চম দিনে পড়ল ইরান-ইজরায়েল সংঘাত। মধ্যস্থতাকারী কাতার ও ওমানকে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত কোনও আলোচনা করতে রাজি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ইরান। ১৩ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২২৪ জন ইরানি নাগরিক। অন্যদিকে ইরানের প্রত্যাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ জন ইজরায়েলি বাসিন্দা এবং আহত হয়েছেন ৫০০ জনেরও বেশি। 

আর এই সার্বিক পরিস্থিতর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে ইজরায়েলের বুকে ইরানের বিমান হামলার তথাকথিত তিনটি ভিডিও। কিন্তু আমরা আমাদের অনুসন্ধানে দেখেছি যে এই ভিডিওগুলির সঙ্গে ইরান-ইজরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের কোনও সম্পর্ক নেই। এই প্রতিবেদনে আমরা ভিডিওগুলির সত্যতা যাচাই করব। 

ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা দফতরে হামলা?

আরও পড়ুন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এমনই একটি আট সেকেন্ডের ভিডিওতে বিমান হামলার জেরে মুহুর্তের মধ্যে একটি বহুতল ভবনকে ধুলিস্যাৎ হতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতর ধ্বংস করছে ইরান। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ই/স/রা/য়ে/লি ডিফেন্স হেডকোয়ার্টার ধ্বসে গেল। ইরানের মিসাইল আক্রমণে। আলহামদুলিল্লাহ।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

তবে ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওর ভবনটি ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতর নয়। বরং সেটি লেবাননের রাজধানী বেইরুটের তাইউনেহ শহরে অবস্থিত একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট। যেটি ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর বিমান হামলা চালিয়ে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছিল ইজরায়েল। ভিডিওটিতে সেই ইজরায়েলি বিমান হামলার সেই মুহুর্তের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। 


ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রে ধুলিস্যাৎ তেল আভিভ? 

১ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের অন্য একটি ভিডিওতে ব্যস্ত রাস্তা পাশে থাকা একটি বিল্ডিংয়ে প্রথমে তীব্র বিস্ফোরণ এবং তার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যপকভাবে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, সেটি ইজরায়েলের অন্যতম প্রধান শহরে ইরানের হামলার দৃশ্য। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ইসরা'য়েলি সেন্ট্রাল কমান্ড: তেল আবিবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে যে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে তা নজিরবিহীন!” (সব বানান অপরিবর্তিত)

Advertisement


যদিও আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে চলা ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং সেটি চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মেক্সিকোর সিনালোয়া প্রদেশের সিনেপোলিস প্লাজার রয়্যাল ইয়াক ক্যাসিনো এবং এয়ার জাম্প ট্রাম্পোলাইনস পার্কে ওয়েল্ডিং কাজ চলাকালীন আগুন লাগার দৃশ্য


জ্বলছে ইজরায়েলের সংসদ ভবন?

অন্য একটি ১৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে একটি আকাশচুম্বী বহুতল ভবনে দাউ-দাউ করে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ তথা ইজরায়েলের সংসদ ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু পার্লামেন্টের অফিস কক্ষ টার্গেট করে মি'সা'ই'ল হা'ম'লা করে ইরান।” (সব বানান অপরিবর্তিত)

আমরা আমাদের অনুসন্ধানে দেখেছি যে, ভাইরাল ভিডিওর ভবনটি ইজরায়েলের সংসদ ভবন নয়। বরং সেটি গত শুক্রবার অর্থাৎ চলতি বছরের ১৩ জুন গভীর রাতে দুবাইয়ের মেরিনা পিনাকলে অবস্থিত ৬৭ তল বিশিষ্ট টাইগার টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য। যদিও আগুন লাগার প্রায় ছ’ঘন্টা পর দমকল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন লাগার মুহুর্তে ভবনটিতে ৩,৮২০ জন বাসিন্দা ছিলেন। তবে সকলকে নিরাপদে ভবন থেকে বার করা সম্ভব হয়। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, ইজরায়েলে ইরানের বিমান হামলার দৃশ্য দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে অন্য দেশের ভিন্ন ঘটনার সব ভিডিও।

Fact Check

Claim

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে ইরান।

Conclusion

ভিডিওটিতে ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর লেবাননের রাজধানী বেইরুটের তাইউনেহ শহরের একটি আবাসিক ভবনে ইজরায়েলি বিমান হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement