ফ্যাক্ট চেক: দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের জ্বালানি ছিটকে আগুন লাগার দাবিতে ছড়ানো হলো অগ্নিকাণ্ডের পুরনো ভিডিও

ভিডিওটি ছড়িয়ে (আর্কাইভ) দাবি করা হচ্ছে যে, ভেঙে পড়া বিমান থেকে ছিটকে আসা জ্বালানির জেরে এই মারাত্মক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে আহমেদাবাদে। ভিডিওটি পোস্ট করে ফেসবুকে লেখা হয়েছে, "শুধু বিমানের জ্বালানি ছিটকে এসে যদি এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতি হয় তাহলে একবার ভাবুন বিমানের ভিতরে সেই সময় কি মারাত্মক অবস্থা হয়েছিল।"

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ভাইরাল ভিডিওটি প্রায় একমাস আগেকার একটি ঘটনা। এর সঙ্গে গত ১২ জুন দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের কোনও সম্পর্ক নেই। 

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে 

ভাইরাল ভিডিওটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খোঁজা হলে ওই একই ভিডিও একটি AVTV India News নামের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে পাওয়া যায় যা একমাসেরও বেশি সময় আগে, গত ২ মে পোস্ট করা হয়েছিল। এর থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে যায় যে সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনার সঙ্গে এই অগ্নিকাণ্ডের কোনও যোগ থাকা সম্ভব নয়। 

ওই ইনস্টাগ্রাম পোস্টে গুজরাটি ভাষায় যে ক্যাপশন লেখা হয়েছিল তার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, আহমেদাবাদের ভেনাস আটলান্টিস আবাসনের বাইরে থাকা বাইকে আগুন লাগার জেরে সেগুলি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। 

এই তথ্যের ভিত্তিতে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে দেশ গুজরাট ও নিউজ গুজরাট নামের দুটি পোর্টালে ২০২৫ সালের ২ মে প্রকাশিত একাধিক খবর পাওয়া যায়। এই খবর অনুযায়ী, ওই দিন আহমেদাবাদের প্রহ্লাদনগর এলাকায় ভেনাস আটলান্টিস বিল্ডিংয়ের পার্কিং এলাকায় আচমকাই একটি বাইকে আগুন লেগে যায়। দেখতে দেখতে পরপর দাঁড়িয়ে থাকা ৮টি বাইককে এই আগুন নিজের কবলে নিয়ে নেয়। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ওই আবাসনের বাসিন্দারা এই আগুন দেখে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের সাহায্যে আগুন নেভাতে উদ্যত হন। কিন্তু আগুনের পরিমাণ এত বেশি ছিল যে কয়েক মিনিটেই বাইকগুলি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 

জ়ি নিউজের গুজরাটি চ্যানেল জ়ি ২৪ কলক-এও এই খবর এবং ভিডিও গত ২ মে সম্প্রচার করা হয়েছিল। সেখানে প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ ওই সংবাদ মাধ্যমকে বলেন যে অতিরিক্ত গরমের মধ্যে কোনও ভাবে বাইক থেকে পেট্রল লিক করার কারণে এই আগুন লেগে থাকতে পারে। প্রতিবেদনের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে স্থানীয় বাসিন্দা এবং দমকল বিভাগ একসঙ্গে আগুন নেভানোর কাজ চালাচ্ছে।

একাধিক রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে আহমেবাদের বিমানবন্দরের নিকটস্থ মেঘানিনগরে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। গুগল ম্যাপে সার্চ করলে দেখা যাবে, আকাশপথে মেঘানিনগর এবং প্রহ্লাদনগরের দূরত্ব কমপক্ষে ১১ কিলোমিটার। ফলে বলাই যায় যে দুর্ঘটনায় বিস্ফোরণের জ্বালানি অত দূর ছিটকে আসার কোনও সম্ভাবনা আপতভাবে নেই। 

সব মিলিয়ে বুঝতে বাকি থাকছে না যে একটি পুরনো এবং অসম্পর্কিত ভিডিওকে বিমান দুর্ঘটনায় জ্বালানি ছিটকে আগুন লাগার ঘটনা বলে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।