Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষিকাকে হেনস্তা? জানুন ভাইরাল ভিডিও-র আসল রহস্য

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে সেটি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে একজন হিন্দু শিক্ষিকা হেনস্তা করা দৃশ্য।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 16 Aug 2024,
  • अपडेटेड 4:05 PM IST

গণঅভ্যুত্থানের কারণে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকেই দেশটি ঘটে চলছে একের পর সহিংসতার ঘটনা। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রক্ষা পাননি আওয়ামী লীগ নেতা বা কর্মী থেকে শুরু করে পুলিশ-প্রশাসন ও সংখ্যালঘু হিন্দুরাও।

আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে কয়েকজন পুরুষের দ্বারা একজন মহিলাকে হেনস্তা ও মারধর করার একটি ভিডিয়ো। সেটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিয়োতে আক্রান্ত যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তিনি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের একজন হিন্দু শিক্ষিকা। হাসিনা সরকারের পতনের পর তাকে মারধর ও হেনস্তা করা হচ্ছে। 

উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “হিন্দু শিক্ষিকার গায়ে হাত...... জোর করে টেনে হেচড়ে তাকে আসন থেকে উৎখাত। ঘটনাটিহলোঃ ইসলামিয়া কলেজ,কুষ্টিয়া।। স্বাধীন অসামপোদায়িক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি এগুলো।” (সব বানান অপরিবর্তিত।) এমনই একটি পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।

আরও পড়ুন

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তিনি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ। তাঁর নাম সাবিনা ইয়াসমিন এবং তিনি হিন্দু নন বরং মুসলিম। 

কীভাবে জানা গেল সত্য?

ভাইরাল ভিডিয়োর সত্যতা জানতে আমরা সেটি থেকে একাধিক স্ক্রিনশট নিয়ে সেগুলির রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। তখন ১৬ আগস্ট bd24report.com নামক একটি বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিয়োর ফ্রেমের সঙ্গে হুবহু মিল-সহ একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ (সাময়িক বরখাস্ত) সাবিনা ইয়াছমিনকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গত বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাবিনা ইয়াসমিন।”

এরপর উপরে উক্ত সূত্র ধরে পুনরায় সার্চ করলে গত ১৫ আগস্ট অপর এক বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন আমাদের নজরে আসে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, “কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন কলেজে যোগ দিতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁকে লাঞ্ছিতের ভিডিও ক্লিপ গতকাল বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তিনি কলেজের শিক্ষক টিপু সুলতানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাবিনা ইয়াসমিনের হাত ধরে টেনেহিঁচড়ে অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে তুলে দিচ্ছেন শিক্ষক টিপু সুলতান। এ সময় সাবিনা ইয়াসমিনকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়।” অর্থাৎ উভয় প্রতিবেদনেই আক্রান্ত মহিলাকে হিন্দু নয় বরং একজন মুসলিম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

Advertisement

তবে এরপর আমরা এবিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে বাংলাদেশি ফ্যাক্ট চেক সংস্থা রিউমর স্ক্যানারের সিনিয়র ফ্যাক্ট চেকার তানভীর মাহতাব আবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “ভিডিয়োতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তিনি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন। তাঁর ধর্মীয় পরিচয় হিন্দু নন বরং তিনি একজন মুসলিম। ২০১৯ সালে তাঁকে তাঁর পদ থেকে বরখস্থ করা হয়। তবে নতুন সরকার গঠনের পর গত ১৪ আগস্ট তিনি পুনরায় নিজের পদে যোগ দিতে গেলে বর্তমান কর্মরত শিক্ষকরা তাঁর সঙ্গে এই দুর্ব্যবহার করেন।”

এর থেকে প্রমাণ হয় যে হিন্দু শিক্ষিকার হেনস্তার দৃশ্য দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর।

Fact Check

Claim

বাংলাদেশের কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে একজন হিন্দু শিক্ষিকা হেনস্তা করা হচ্ছে।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটিতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তিনি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি হিন্দু নন বরং একজন মুসলিম।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement