Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: মণিপুরে বিদ্রোহীদের থেকে বিপুল অস্ত্র উদ্ধার দাবিতে ছড়াল মায়ানমারের ভিডিও

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি মণিপুরের নয়। বরং সেটি মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী বার্মা ন্যাশনাল রেভলিউশনারি আর্মির তরফে দেশটির সেনাবাহিনীর থেকে উদ্ধার করা নগদ অর্থ ও অস্ত্রের দৃশ্য।

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 21 May 2025,
  • अपडेटेड 4:27 PM IST

গত ১৪ মে মণিপুরে একটি বড় অভিযানে মোট ১০ জন বিদ্রোহীকে নিকেশ করেছে অসম রাইফেলসের সদস্যেরা। ভারত-মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন চান্দেল জেলার খেংজয় তহসিলের নিউ সামতাল গ্রামের অভিযানে উদ্ধার হয় AK-47 ও একটি M4 রাইফেল-সহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে, একটি ঘরের মেঝেতে প্রচুর পরিমাণ নগদ টাকার বান্ডিল এবং বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র পড়ে থাকার ভিডিও। পাশাপাশি কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তিকে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে নিজেদের মোবাইলে ওই নগদ অর্থ ও অস্ত্রের ছবি কিংবা ভিডিও করতেও দেখা যাচ্ছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, মণিপুরে অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহীদের থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সদস্যরা। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, “ভারতের মনিপুর থেকে উদ্ধারকৃত বিপুল অস্ত্রশস্ত্র এবং নগদ ভারতীয় মূদ্রা। যেদিন থেকে ভারতীয় সেনা মণিপুর নিজেদের দায়িত্যে নিয়েছে মনিপুর শান্ত। বিপুল অস্ত্র সমেত সকল বিদ্রোহীদের উপযুক্ত যোগ্য জবাব দিচ্ছে।  ভারত মাতা কি জয়।”


ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি মণিপুরের নয়। বরং সেটি মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী বার্মা ন্যাশনাল রেভলিউশনারি আর্মির তরফে দেশটির সেনাবাহিনীর থেকে উদ্ধার করা নগদ অর্থ ও অস্ত্রের দৃশ্য।

আরও পড়ুন

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল দাবি ও ভিডিওটির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল একটি ইউটিউব চ্যানেলে এই একই ভিডিও পাওয়া যায়। বার্মিজ ভাষায় সেই ভিডিওর শিরোনামে লেখা হয়েছে, "ক্যাম্পটি দখল করা হয়েছে, অস্ত্র এবং তিন লাখেরও বেশি নগদ বাথ (থাইল্যান্ডের মুদ্রা) নগদ উদ্ধার করা হয়েছে।" পাশাপাশি সেখানে মায়ানমার এবং চিনল্যান্ডের মতো হ্যাশট্যাগও লেখা হয়ছে।

পাশাপাশি ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করার সময় আমরা লক্ষ্য করি সেখানে যে নগদ অর্থের বান্ডিলগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে সেগুলি কোনও ভারতীয় মুদ্রা নয়। এছাড়াও, আমরা ভিডিওতে উপস্থিত সশস্ত্র ব্যক্তিদের পোশাকে BNRA লেখা দেখতে পাই। এই সংক্রান্ত অনুসন্ধান চালালে জানা যায়, BNRA অর্থাৎ বার্মা ন্যাশনাল রেভলিউশনারি আর্মি মায়ানমারের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। যারা মায়ানমারের বর্তমান সরকারকে উৎখাত করতে এবং সকল উপজাতির সমান অধিকার প্রদানের জন্য লড়াই করছে।

Advertisement

এরপর এই সংক্রান্ত পরবর্তী অনুসন্ধান চালালে চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল মায়ানমার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রেড নিউজ এজেন্সির ফেসবুক পেজে এই একই ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফালামের যুদ্ধের সময় এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছিল।

এরপর উক্ত তথ্যের উপরে ভিত্তি করে অনুসন্ধান চালালে মায়ানমার ভিত্তিক একাধিক সংবাদমাধ্যম এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সেইসব প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৭ এপ্রিল চিন রাজ্যের ফালাম শহরে মায়ানমার সেনাবাহিনীর একমাত্র অবশিষ্ট পাহাড়ের চূড়ার ঘাঁটি দখল করে চিন ব্রাদারহুড জোট। ঘাঁটিটি মায়ানমার সেনাবাহিনীর পদাতিক ব্যাটালিয়ন ২৬৮-এর অন্তর্গত ছিল। এটি দখলের মাধ্যমে, চিন ব্রাদারহুড ফালামের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে। চিন ব্রাদারহুড হল মায়ানমারের চিন রাজ্যে সক্রিয় বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একটি সামরিক ও রাজনৈতিক জোট। যারা বার্মা ন্যাশনাল রেভলিউশনারি আর্মি-সহ অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে ফালামের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে বলে জানা যায়। 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, মায়ানমারের ভিডিও শেয়ার করে মণিপুরে ভারতীয় সেনারা নগদ অর্থ ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে বলে শেয়ার করা হচ্ছে।

Fact Check

Claim

ভিডিওটিতে মণিপুরে অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহীদের থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সদস্যরা।

Conclusion

ভাইরাল ভিডিওটি মণিপুরের নয়। বরং সেটি মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী বার্মা ন্যাশনাল রেভলিউশনারি আর্মির তরফে দেশটির সেনাবাহিনীর থেকে উদ্ধার করা নগদ অর্থ ও অস্ত্রের দৃশ্য।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement