Advertisement

ফ্যাক্ট চেক: নেপালে ভারতীয় সাংবাদিকদের জুতোর মালা পরিয়ে হেনস্তা? ছড়াল শর্ট ফিল্ম শুটিংয়ের দৃশ্য

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি নেপালের নয় এবং এর সঙ্গে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর সংগ্রহের কোনও সম্পর্কও নেই। বরং এটি একটি বাংলাদেশি বিনোদনমূলক চ্যানেলের তরফে বানানো শর্ট ফিল্ম শুটিংয়ের দৃশ্য। 

সুরাজউদ্দিন মণ্ডল
  • কলকাতা,
  • 22 Sep 2025,
  • अपडेटेड 4:26 PM IST

সম্প্রতি ‘জেন-জি’দের প্রবল বিক্ষোভের জেরে পালা বদল হয়েছে নেপালে। সেই বিক্ষোভ সংক্রান্ত খবর কভার করতে নেপালে উপস্থিত হয়েছিল ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। আর এই সার্বিক পরিস্থিতির মধ্যে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। যেখানে উত্তেজিত বেশকিছু জনতাকে এক ব্যক্তি ও একজন মহিলার গলায় জুতোর মালা পরিয়ে মারতে মারতে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। 

ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, নেপালে খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া ভারতীয় মিডিয়ার এক সাংবাদিক ও একজন চিত্র সাংবাদিকের গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘুরিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। উদাহরণস্বরূপ, এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে এর ফ্রেমের উপরে লিখেছেন, “গদি মিডিয়া নেপালে গিয়েছিল, ক্যামেরাম্যান ও রিপোটার কে গলায় জুতোর মালা ঝুলিয়ে দিলো।” (সব বানান অপরিবর্তিত) পাশাপাশি ফ্রেমের উপরে আজতকের উপস্থাপিকা-সাংবাদিক অঞ্জনা ওম কাশ্যপ-সহ একাধিক ভারতীয় সাংবাদিকের ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে। 

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি নেপালের নয় এবং এর সঙ্গে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর সংগ্রহের কোনও সম্পর্কও নেই। বরং এটি একটি বাংলাদেশি বিনোদনমূলক চ্যানেলের তরফে বানানো শর্ট ফিল্ম শুটিংয়ের দৃশ্য। 

আরও পড়ুন

সত্য উন্মোচন হলো যেভাবে

ভাইরাল ভিডিও এবং দাবির সত্যতা জানতে সেটি থেকে একাধিক কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর একটি ইউটিউব চ্যানেলে অন্য অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা এই একই ঘটনার একটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেই ভিডিওতেও ভাইরাল ক্লিপে জুতোর মালা পরিহিত ব্যক্তি এবং মহিলা-সহ বাকিদের হুবহু একই পোশাকে দেখতে পাওয়া যা। তবে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় শুরুতে একটি বাজারের ভিতরে সকলে দাঁড়িয়ে আছেন। এরপর ক্যামেরার পিছন থেকে কেউ বাংলায় নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ‘অ্যাকশন’ বলার পরই সেখানে উপস্থিত বাকিরা ওই মহিলা এবং ব্যক্তিকে মারতে মারতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় ভিডিওটি নেপালের নয়। বরং এটি বাংলাভাষী কোনও স্থানের ঘটনা।

Advertisement


অন্যদিকে গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই একই চ্যানেলে ভিন্ন স্থানে এই একই ঘটনার আরও দুটি ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানেও এই একইভাবে ক্যামেরার পিছন থেকে কাউকে নির্দেশ দিতে এবং ‘অ্যাকশন’ বলতেও শোনা যাচ্ছে। যা থেকে সন্দেহ তৈরি হয় যে যে ভিডিওটি কোনও শুটিংয়ের দৃশ্য হলেও হতে পারে। এরপর এই সন্দেহ থেকে চ্যানেলটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে আমরা সেখানে আরও একাধিক ভিডিওতে ভাইরাল ভিডিওর মহিলা এবং পুরুষকে দেখতে পাই। সেইসব ভিডিওতে উভয়কে অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। যা থেকে প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় ভাইরাল ভিডিওটি একটি শুটিংয়ের দৃশ্য। 

তবে বিষয়টি সম্পর্কে একশো শতাংশ নিশ্চিত হতে এরপর আমরা উক্ত ইউটিউব চ্যানেলের মালিক সেখ সামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান যে, “ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের শেরপুর জেলায় একটি শর্ট ফিল্ম শুটিংয়ের সময় তোলা হয়েছিল। সিনেমার এই নির্দিষ্ট দৃশ্যে ওই ব্যক্তি ও মহিলাকে পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়ার দৃশ্য ধারণ করা হয়েছিল। ভিডিওর মহিলা এবং পুরুষ পেশায় অভিনেত্রী ও অভিনেতা। তারা এই ধরনের একাধিক সিনেমায় অভিনয় করে থাকেন। পাশাপাশি তারা সম্পর্কে একে অপের স্বামী-স্ত্রী।” 

এর থেকে প্রমাণ হয় যে, নেপালে ভারতীয় সাংবাদিকদের জুতোর মালা পরিয়ে হেনস্তা করা হয়েছে দাবিতে ছড়াল বাংলাদেশের শর্ট ফিল্ম শুটিংয়ের দৃশ্য।

Fact Check

Claim

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নেপালে খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া ভারতীয় মিডিয়ার এক সাংবাদিক ও একজন চিত্র সাংবাদিকের গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘুরিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

Conclusion

ভিডিওটি নেপালের নয় এবং এর সঙ্গে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর সংগ্রহের কোনও সম্পর্কও নেই। বরং এটি একটি বাংলাদেশি বিনোদনমূলক চ্যানেলের তরফে বানানো শর্ট ফিল্ম শুটিংয়ের দৃশ্য।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  1. কাক: অর্ধসত্য
  2. একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  3. অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Do you think a messenge is a fake ?
To know the truth, send that to our Number73 7000 7000 you can email on factcheck@intoday.com
Read more!
Advertisement
Advertisement