পাহাড়ের প্রত্যন্ত গ্রামে পর্যটনকে ভিন্ন উপায়ে পৌঁছে দিতে গুরুবাস প্রকল্প গ্রহণ করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম। যেখানে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পিউরিটি, ট্র্যাডিশন এবং সাসটেইনেবল ট্যুরিজম। শহরে জীবনযাত্রার সঙ্গে গ্রামীণ জীবনের মেলবন্ধন ঘটানো একটা অন্যতম উদ্দেশ্য।
বেশিরভাগ জঙ্গল এবং জঙ্গলের বাসিন্দারা বায়োডাইভারসিটি হিসেবে চিহ্নিত। তার প্রধান কারণ হল ঐতিহ্য এবং গ্রামীণ যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁরা প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে। এর সঙ্গে আধ্যাত্মবাদ এবং সংস্কৃতি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত রয়েছে। যেখানে পর্যটন গৌরব এবং ঐতিহ্যকে গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছে।
গুরুবাস আসলে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির যোগাযোগ কমে আসার বিরুদ্ধে জোরদার প্রতিবাদ। প্রতিটি সংস্কৃতি আলাদা। শহুরে হোক কিংবা গ্রামীণ, প্রত্যেকটি জায়গার মানুষ এলাকাভেদে তাদের নিজের ভৌগোলিক স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করে থাকে।
গুরুবাস চিন্তাধারা মানুষের জীবন এবং তাদের ঐতিহ্যের গুরুত্ব দর্শনকে উঁচু তারে বেঁধে রাখতে সাহায্য করে। যেখানে পুরনো ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেল তৈরি করা হচ্ছে অত্যন্ত সচেতনভাবে। কিন্তু প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে নয় নতুনের সঙ্গে পুরনো যোগাযোগ এবং শ্রদ্ধা যাতে বজায় থাকে সে বিষয়টিও লক্ষ্য রাখা
গুরুবাসের ধারণা হল, জঙ্গলই হল অভিভাবক। জঙ্গল এলাকায় ৮০ শতাংশ বাস্তুতন্ত্র সঠিকভাবে বজায় রয়েছে। যেটা আমাদের কৃষিপণ্যগুলি প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। এই প্রকল্পের জঙ্গল, খাবার, জ্বালানি, ঘর তৈরির সামগ্রী, ওষুধ এবং দৈনিক ব্যবহার্য জিনিস এর প্রধান উৎস। তা ছাড়া প্রাকৃতিক অক্সিজেন সরবরাহ করেছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুদিবসকে এ কারণে এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। গুরুবাস লঞ্চ করার জন্য শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতনের যে চিন্তাভাবনা থেকে তৈরি করা হয়েছিল, সেটির অনুকরণেই গুরুবাসের সূচনা বলে দাবি করেন অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন এন্ড ট্যুরিজম এর সদস্য রাজ বসু। তিনি জানান, রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনের গ্রামীণ সংস্কৃতিকে বিশ্বজনীন করে তুলতে পেরেছিলেন এই পদ্ধতিতে। বিভিন্ন জায়গার নিজস্ব সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতেই গুরুবাস প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ সিকিম, দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সঙ্গে নদীয়া, মেদিনীপুর, বীরভূম জেলা এবং বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, নেপালের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট এবং ভুটানের বেশ কিছু এলাকাকে গুরুবাস প্রকল্পের অধীনে রাখা হয়েছে।
এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে। শনিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে এই প্রকল্পের সূচনায় উপস্থিত ছিলেন বাইচুং ভুটিয়া