শিখা মিত্র। রবিবার ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় শিরোনামে এসেছেন প্রয়াত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের স্ত্রী শিখা। সাতবছর পর তাঁর তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সূত্রের খবর, গত ১৭ অগাস্ট সোমেন মিত্রর বাৎসরিকের দিন শিখার সঙ্গে ফোনে কথা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেদিনই কার্যত তৃণমূলে ফেরা নিশ্চিত হয়ে যায় চৌরঙ্গীর প্রাক্তন বিধায়কের।
২০০৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সোমেন মিত্র। সেই সময় শিখাও যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। ২০১৪ সালে কংগ্রেসে ফিরে আসেন সোমেন। ২০১১ সালে চৌরঙ্গি থেকেই তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন শিখা। কিন্তু দলীয়স্তরে মতানৈক্যের জেরে মমতার বিরুদ্ধে ২০১৩ সাল থেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন তিনি। সেজন্য তাঁকে সাসপেন্ড করে ঘাসফুল শিবির।
কেন তাঁকে দলে নিল তৃণমূল? রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে শিখাকে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছিল BJP কিন্তু, তিনি যাননি। তখন থেকেই কার্যত পরিষ্কার হয়ে যায়, রাজনীতিতে ফিরলে শিখা মমতার হাতই ধরবেন।
কিন্তু, ২০১৩ সাল থেকে যখন তিনি তৃণমূলে কোণঠাসা হতে শুরু করেন, তারপর থেকেই বাছা বাছা বিশেষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছিলেন। যা নিয়ে জোর চর্চাও হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। কী কী বলেছিলেন তিনি?
একটি সাক্ষাৎকারে শিখা মিত্র বলেছিলেন, 'যখন তখন রাস্তায় শুয়ে পড়েন, ভাঙচুর করেন এই ভাবেই রাজনীতিতে আগমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আমার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। আমাকে সোমেনবাবু বারণ করেছিলেন। সেদিন শুনিনি। সোমেনবাবু আমাকে বলেছিলেন, শিখা তুমি ওঁকে হাওয়াই চপ্পল ও সাদা শাড়ি দেখে বিচার করতে যেও না।'
শিখা আরও বলেছিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচণ্ড মিথ্যে বলেন। নাটক করতে জানেন। আমার জানা নেই রাজ্যের মানুষ কেন ওঁকে এত মানেন। এখন উনি বিজেপিকে গালি দিচ্ছেন। উনি তো নিজেই মন্ত্রী ছিলেন বিজেপির।
শিখা বলেছিলেন, 'উনি ইউজ করে ছুঁড়ে ফেলে দেন। সবসময় করে থাকেন। আমি সেটা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছিলাম। সোজা কথায়, যে ওঁর জুতো পালিশ করতে পারবেন, তাঁকে রাখবেন। সেই কারণে আমি থাকতে পারিনি।'
শিখা ওই সাক্ষাৎকারেই বলেছিলেন, 'আমি ভাবি যাঁরা তৃণমূলে রয়েছেন, তাঁদের কি সত্যিই মান সম্মান আছে? আমি একথা বলব না যে, সবার নেই। তবে আমার এই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।'
তবে রবিবার তৃণমূলে যোগ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়ষী প্রশংসা করেন শিখা মিত্র। জানান, তিনি বরাবরই তৃণমূলেই ছিলেন। এটা শুধুই আনুষ্ঠনিকতা মাত্র। যে হেতু অনেকদিন রাজনৈতিক ময়দান থেকে দূরে ছিলেন তিনি। তাই ফের তৃণমূলে এমন বরণ সমারোহ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান বলেও জানান শিখা।