পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জোড়া ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার ১৯ ঘণ্টার অভিযানে পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আবাস বেলঘরিয়া থেকে নগদ ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা পেয়েছে ইডি। এর আগে শুক্রবার অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫০ কোটির কাছাকাছি। সেই সঙ্গে কোটি টাকার সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রাও রয়েছে।
এত টাকা কার? এটা কি অর্পিতার টাকা? ইডি সূত্রের খবর, জেরায় অর্পিতা দাবি করেছেন, সমস্ত টাকাপয়সা পার্থর। তিনি জানতেন না তাঁর কাছে কত টাকা আছে।
সত্যিই কি এই টাকা রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থের? কারণ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় কমিশনে যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন পার্থ সেই অনুযায়ী গত ১০ বছরে আয় কমেছে তাঁর।
২০২১ সালে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন তাঁর হাতে নগদ রয়েছে ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬৭৬ টাকা। সেই সঙ্গে স্থায়ী আমানত এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে দু'টি ব্যাঙ্কের ৪টি শাখায় টাকা রয়েছে তাঁর। পার্থর জমাকৃত টাকা কলকাতার এসবিআই-এ ২৪ লক্ষ ৮১ হাজার, পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্কে ২৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৯৩৫ টাকা,এসবিআই-এ ১৫ লক্ষ ১ হাজার ১৬১ টাকা এবং পঞ্জাব ও সিন্ধ ব্যাঙ্কে ১ লক্ষ ৮ হাজার ৬৯ টাকা। তাঁর নামে একটি ২৫ লক্ষ টাকার জীবনবিমাও রয়েছে।
জীবনবিমা, ব্যাঙ্কের আমানত মিলিয়ে তাঁর সঞ্চয় ৯০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬৩ টাকা!নিজের গাড়ি নেই বলেও জানিয়েছিলেন পার্থ।
নিজের ফ্ল্যাট বা বাগান বাড়ির উল্লেখ ছিল না। তিনি দাবি করেছেন, পৈতৃক একটি বাড়ি রয়েছে নাকতলায়। দেড় কাঠা জমির উপর ওই বাড়িটি বাবার কাছ থেকে পেয়েছিলেন বলে হলফনামায় দাবি করেছিলেন পার্থ।
১৯৮৯ সালে বাড়িটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ৬ লক্ষ টাকা। ২০২১ সালের বাজার অনুযায়ী সেই বাড়ির দাম ২৫ লক্ষ। তাঁর কাছে মূল্যবান গয়না নেই বলেও জানিয়েছিলেন পার্থ। তাঁর নামে ঋণও নেই।
২০১৯- ২০ অর্থবর্ষে তাঁর মোট উপার্জন ছিল ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭২০ টাকা। মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯০ লক্ষ ৯৪ হাজার ৮৬৩ টাকা।
২০১১ সালে ভোটে জিতে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই সময় তাঁর হলফনামা অনুযায়ী নগদ ছিল ৬৩০০ টাকা। ২০১০-১১ অর্থ বর্ষে তাঁর আয়ের পরিমাণ ১১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫৫৫ টাকা।
দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার সময় অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে পার্থর আয়ের পরিমাণ ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার ১ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তাঁর মোট উপার্জন ছিল ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭২০ টাকা।
অর্থাৎ গত ১০ বছরে আয় কমছে প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী আয় ১০ বছরে আয় কমেছে ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭২০ টাকা।