প্রশাসনের অভিষেকের 'অভিষেক' কবে?
এটাই এখন তৃণমূলের অনেকের প্রশ্ন। তবে এটা নতুন প্রশ্ন নয়। অনেকদিন ধরেই ঘোরাফেরা করছে রাজ্য রাজনীতিতে। নতুন করে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। অভিষেকের জন্মদিনের আগেরদিন কুণাল লেখেন,'সময়ের ধারা মেনেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়'। তারপর থেকে একাধিক তৃণমূল নেতার মুখে শোনা গিয়েছে অভিষেক-স্তুতি। তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর এক কাঠি এগিয়ে অভিষেককে উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চেয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়! আড়ালে-আবডালে তৃণমূলের সব নেতাই তা স্বীকার করেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অভিষেকের নেতৃত্বে লোকসভা ভোটে ভালো ফল করেছে তৃণমূল। ২৯টি আসন জিতেছে তারা। দলে শুধু নেত্রীর ভাইপো হিসেবেই নয়, সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে ক্রমশ বড় হয়েছে অভিষেকের ছায়া। এবার তাঁকে প্রশাসনে চাইছেন দলের নেতারা। শুরুটা করেছিলেন কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন,'কম বয়সেই যোগ্য নেতৃত্বের যে ছাপ অভিষেক রাখছে, সময়ের সঙ্গে তা আরও ব্যাপকতর হতে থাকুক। মমতাদিকে দীর্ঘকাল দেখেছি, এখন অভিষেককেও দেখছি। দ্রুত আরও পরিণত। আবেগের সঙ্গে মিশছে আধুনিক পদ্ধতি, প্রযুক্তি। আরও ধারালো হচ্ছে অভিষেক। সময়ের নিয়মে মমতাদির পর একদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবে অভিষেক, তৃণমূল কংগ্রেসের সেনাপতি থেকে যুগান্তরের পতাকায় কান্ডারী। মমতাদির ঘরানার সময়োপযোগী ধারক ও বাহক। মমতাদির নেতৃত্ব চলতে থাকুক, আর তার মধ্যেই আগামীর পদধ্বনি হতে থাকুক বাংলার রাজনৈতিক সামাজিক চালচিত্রে'।
তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর অবশ্য অপেক্ষা করতে চান না। তিনি চান, উপমুখ্যমন্ত্রী করা হোক অভিষেককে। কবীর বলেন,'সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী না হলেও অভিষেককে ডেপুটি সিএম করে স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হোক। তা দলের পক্ষে মঙ্গলজনক হবে'।
লোকসভা ভোটের আগে মমতাকেই দলের নেত্রী হিসেবে বলে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রীরামপুরের সাংসদের ওই মন্তব্য নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। সেই কল্যাণও এখন অভিষেককেই আগামী দিনের নেতা হিসেবে দেখছেন। তাঁর মন্তব্য,'মমতাদির পর তাঁরই (অভিষেক) তো জায়গা। এনিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা দল ঠিক করবে। তবে মমতাদির পরে রাজ্য রাজনীতিতে যিনি জনসমর্থন পেয়েছেন তিনি হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়'।
কিন্তু কবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনে আসবেন?
সেই ভবিষ্যদ্বাণীও করেছেন কুণাল ঘোষ। ফিরে যেতে হবে ২০২২ সালে। ২ মে ফেসবুকে কুণাল লিখেছিলেন,'২০৩৬ সাল পর্যন্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মমতাদি। আর সেই ২০৩৬ সালে তিনি অভিভাবকের মতো উপস্থিত থাকবেন এমন অনুষ্ঠানে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেবেন অভিষেক'।
রাজনৈতিক মহল বলছে, ২০২৬ সালের ভোট আসতে আসতে অভিষেকের প্রশাসনিক 'অভিষেক' নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে দাবি আরও বাড়বে।