অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁর ঠাঁই হয়েছে তিহার জেলে। কিন্তু সুকন্যার গ্রেফতারিতে ভেঙে পড়েছেন আরও একজন। তিনি এতটাই চিন্তিত যে, কান্নাকাটি করেছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেছেন, 'ED আমাকেও গ্রেফতার করুক।'
কিন্তু কেন এই তরুণী চাইছেন যে তাঁকেও গ্রেফতার করা হোক ?
ওই তরুণীর নাম সুতপা পাল। বোলপুরের বাসিন্দা তিনি। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সুতপার অর্থনৈতিক অবস্থা মোটেও ভালো নয়। তিনি নিজে ক্যান্সারে আক্রান্ত। সেই সুতপা আসলে সুকন্যার বান্ধবী। বলা যায় অভিন্ন হৃদয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বোলপুরে গার্লস হাইস্কুলে পড়াশোনা করতেন সুকন্যা ও সুতপা। সেই থেকেই তাঁদের বন্ধুত্ব। ক্যান্সারে আক্রান্ত সুতপার চিকিৎসার খরচও নাকি বহন করতেন সুকন্যা। ২০২০ সালে মারা যান সুকন্যার মা। বাবা অনুব্রত দলীয় কাজেই দিনভর ব্যস্ত থাকতেন। সেই সময় সুতপা অনুব্রতর ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেই থেকে সুতপা ও সুকন্যার মধ্যে বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হয়।
আরও পড়ুন : 'বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে মানুষের আবেগ আছে', অভিষেককে কড়া চিঠি
আর প্রায় আটমাস আগে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর সুতপা হয়ে ওঠেন সুকন্যার প্রায় সর্বক্ষণের সঙ্গী। সেই সময় সুকন্যা অভিযোগ করেছিলেন, দলীয় নেতা-কর্মীদের তিনি পাশে পাচ্ছেন না। এলাকাবাসীর দাবি, সুকন্যার এই অভিযোগ মিথ্যে নয়। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর ঘটনাটি অনুব্রত মণ্ডলের নিচুপট্টি এলাকার বাড়িতে লোকের আনাগোনা কমেছে। অনেক নেতা-কর্মীই দূরত্ব বাড়িয়েছেন সেই বাড়ির সঙ্গে। তখন এই সুতপা ছিলেন সুকন্যার পাশে।
সুতপা যে সুকন্যাকে নিয়ে একা চিন্তিত এমনটাও নয়। সুকন্যাও বান্ধবীকে নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন। জানা গিয়েছে, ED-র জেরার মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সুকন্যা। তিহাড়ে থাকা অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চান তিনি। শুধু তাই নয়, খোঁজ নেন বান্ধবীরও।
তাই তো সুকন্যা গ্রেফতার হওয়ার পরই দিল্লিতে ছুটে যান সুতপা। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, 'ওর মা নেই। বাবাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন ওকেও গ্রেপ্তার করে নিল। ওর পাশে কেউ নেই। আমি চাই আমাকেও গ্রেপ্তার করুক ইডি। এছাড়া আমি আর কী সাহায্য করতে পারব? আমি নিজের চিকিৎসাই তো চালাতে পারব না।'