বালিগঞ্জে জিতলেন বাবুল সুপ্রিয়। নিকটতম সিপিএম প্রার্থী সায়রা হালিমকে হারিয়েছেন ১৯,৯০৪ ভোটে। জয়ের সঙ্গে কাঁটাও বিঁধছে রাজ্যের শাসক দলকে। কারণ ব্যবধান গতবারের চেয়ে অনেকটাই কমে গিয়েছে তৃণমূল প্রার্থীর। উল্লেখ্য, একুশের ভোটে ৭৫ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপিকে হারিয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অকস্মাৎ মৃত্যুর কারণে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটি ফাঁকা হয়। ওই কেন্দ্রে বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা বাবুল সুপ্রিয়কে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ সালে বালিগঞ্জে ৭৫ হাজার ৩৩৯ ভোটে বিজেপি-কে মাত দিয়েছিলেন সুব্রত।৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট গিয়েছিল তাঁর ঝুলিতে। সেখানে বাবুলের জয়ের ব্যবধান মোটে ১৯,৯০৪।
উপনির্বাচনে সাধারণভাবে ভোট কম পড়ে। বালিগঞ্জে জয়-পরাজয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক ক্ষমতায় কোনও বদল আসে না বলে মানুষের আগ্রহ থাকে না। একথা মাথায় রাখলেও প্রাথমিক অঙ্ক বলছে, বালিগঞ্জের ৫১ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসিয়েছে সিপিএম। গত বিধানসভায় সিপিএম প্রার্থী ফুয়াদ হালিম পেয়েছিলেন মাত্র ৫.৬১ শতাংশ ভোট। এবার ফুয়াদ-জায়া সায়রার ভোটের হার ৩০.১%। অর্থাৎ বছর ঘোরার আগেই ২৫ শতাংশের কাছাকাছি বৃদ্ধি। গতবার দ্বিতীয়স্থানে থাকা বিজেপি দশম রাউন্ড পর্যন্ত ছিল চতু্র্থস্থানে। শেষপর্যন্ত ১২.৮ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃতীয়স্থানে থিতু হয়েছে মোদী-শাহের দল।
অনেকেই মনে করছেন, বাবুলের অতীত রাজনৈতিক সংস্রবের খেসারত দিতে হয়েছে তৃণমূলকে। সংখ্যালঘুরা বেছে নিয়েছে সিপিএমকে। সংখ্যালঘুরা তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর কথায়, সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ হয়েছে। তার সুবিধা সিপিএম ও কংগ্রেস পাবে। সংখ্যালঘুরা আমাদের ভোট দেন না।'
তবে ব্যবধান কমার নেপথ্যে ভোটদানের হার কমার কথা তুলছে তৃণমূল। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমারের ব্যাখ্যা,'উপনির্বাচনে ভোট খুব কম পড়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সেখানে এবার পড়েছে মাত্র ৪১ শতাংশ।'
বিজেপিতে থাকাকালীন বাবুলের নানা মন্তব্য নিয়ে প্রচার শুরু করেছিল বামেরা। তাদের অভিযোগ, বিজেপিতে থাকাকালীন মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। বাবুলকে প্রার্থী করা নিয়ে আপত্তি করেছিলেন ইমাম সংগঠেনর প্রধান মহম্মদ ইয়াহিয়াও। 'নো ভোট টু বাবুল' প্রচারও চলেছিল। তার প্রভাব ইভিএমে পড়েছে বলে মত অনেকের। ভোটের ফলপ্রকাশের পর ইয়াহিয়া জানান,'বালিগঞ্জের ভোটাররা আমাদের কথা শুনেছেন। ভোটারদের একটা অংশ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবার আত্মসমীক্ষা করা উচিত।'
আরও পড়ুন- বালিগঞ্জ-আসানসোলে এগিয়ে TMC, কী বার্তা মমতার?