Advertisement

Exclusive: 'বাংলা জানা কি অপরাধ!', চাকরি হারিয়ে অসহায় শিক্ষিকা কী বললেন?

বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বাংলার বুকে বাংলা পড়ানোর স্বপ্ন দেখেছেন। চাকরি পেয়েছিলেন ৯ মাস আগে। আচমকা গত শুক্রবার একটি চিঠিতে চাকরি চলে গেল বেলঘরিয়ার দেবস্মিতা রায়ের। পড়াতেন কামারহাটির আড়িয়াদহের হোলি চাইল্ড নামে একটি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে। আচমকা চিঠিতে চাকরি চলে যাওয়ায় কার্যত ভেঙে পড়েছেন ওই শিক্ষিকা। 

সংগৃহীত ছবি।
সুকমল শীল
  • কলকাতা ,
  • 19 Mar 2023,
  • अपडेटेड 7:55 PM IST
  • বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
  • বাংলার বুকে বাংলা পড়ানোর স্বপ্ন দেখেছেন।

বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বাংলার বুকে বাংলা পড়ানোর স্বপ্ন দেখেছেন। চাকরি পেয়েছিলেন ৯ মাস আগে। আচমকা গত শুক্রবার একটি চিঠিতে চাকরি চলে গেল বেলঘরিয়ার দেবস্মিতা রায়ের। পড়াতেন কামারহাটির আড়িয়াদহের হোলি চাইল্ড নামে একটি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে। আচমকা চিঠিতে চাকরি চলে যাওয়ায় কার্যত ভেঙে পড়েছেন ওই শিক্ষিকা। 

রবিবার বিকেলে 'আজতক বাংলা'কে সদ্য চাকরি হারানো দেবস্মিতা বললেন, ' বাংলা জানা কি অপরাধ। আগের দিনও জানতাম না যে আমার চাকরি চলে যাবে। আমিই একমাত্র বাংলার শিক্ষিকা ছিলাম স্কুলে। বাংলা কেউ পড়তে চাইছে না, এই যুক্তিতে আমার চাকরি চলে গেল।'

উত্তর ২৪ পরগনার (Uttar 24 Parganas) কামারহাটি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আড়িয়াদহ নওদাপাড়া হোলি চাইল্ড স্কুলের কর্তৃপক্ষের দেওয়া ওই চিঠির ছবি শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) ভাইরাল। তাতে দেখা যাচ্ছে, শুক্রবার ১৭ মার্চ তারিখ দেওয়া লেখা ইংরেজি চিঠিটিতে সংশ্লিষ্ট বাংলা শিক্ষিকাকে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট লিখেছে, ‘সম্মানীয় ম্যাডাম, আপনি জানেন আমাদের স্কুলে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা অথবা হিন্দি পড়ানো হয়। প্রায় সব পড়ুয়া হিন্দিকেই বেছেছে। বাংলা ভাষা বিলুপ্তপ্রায় (নন এগজিস্টিং)। সব ক্লাস মিলিয়ে মাত্র দু’-তিনজন বাংলা ভাষা নিলেও তারা ক্লাস করবে না। কারণ, তাদের বলা হয়েছে দ্বিতীয় ভাষা বাংলা নিলে ক্লাস কামাই করা চলবে না। কিংবা স্কুলের বদলে বাড়িতেই শিখতে হবে। আপাতত তারা বাড়িতেই বাংলা পঠনপাঠন চালাতে চায়।’

দেবস্মিতা বললেন, 'স্কুলে আর বাংলা শিক্ষকের দরকার নেই বলে জানিয়ে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব‌্যাহতি দিয়েছে স্কুল। কর্তৃপক্ষের তরফে চিঠিটি দিয়েছেন স্কুলের কর্ণধার কমলেশ বসু।'

চাকরি হারিয়ে চিন্তায় পড়েছেন দেবস্মিতা। সেইসঙ্গে অবাকও হচ্ছেন। বললেন, 'এটাই আমার প্রথম চাকরি ছিল। আচমকা চাকরি চলে। জানি না কবে পাব। বাংলা ভাষা নাকি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, এবং এই বাংলাতেই সেটা ভেবে আমি বেশি মর্মাহত।' পাশাপাশি তিনি জানালেন, পরে ওই চিঠির বয়ান সামান্য বদলে তাঁকে পাঠানো হয়েছে স্কুলের তরফে। 

Advertisement

দেবস্মিতা আরও বললেন, 'বিষয়টি আমার খুবই অমানবিক মনে হয়েছে। আমার চাকরি যাচ্ছে, আমি চিঠি হাতে পাওয়ার আগে জানতামই না। সবথেকে খারাপ লাগছে, বাংলা পড়াই বলে আমার চাকরি গেল, তাও কলকাতার বুকে। তাই চেয়েছিলাম সবাই বিষয়টি জানুক। তাই ফেসবুকে শেয়ার করি।'

আরও পড়ুন-'বাংলা ভাষা বিলুপ্তপ্রায়', শিক্ষিকাকে ছাঁটাই কামারহাটির ইংরেজিমাধ্যম স্কুলে

রবিবার স্কুলটির কমলেশবাবু আজতক বাংলাকে ফোনে বললেন, 'ভুলবশত ওই লেখা। অনিচ্ছাকৃত। আসলে স্কুলে বাংলার পড়ুয়া ক্রমশ কমছে। দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলারও জনপ্রিয়তা কমছে। যেকারণেই বাংলার শিক্ষক কমানো হয়েছে। তবে আমাদের নোটিশের বয়ানে ভুল হয়েছে। সেজন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা সংশোধন করে ফের ওই নোটিশ পাঠিয়েছি। ভুলবশত ‘স্টুডেন্টস’ শব্দটা লেখা হয়নি। তাতে বাক্যটার অর্থ দাঁড়িয়েছে, বাংলা ভাষা প্রায় বিলুপ্ত। ত্রুটি নজরে আসতেই তা শুধরে নিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমি ক্ষমা চাইছি।’ 

দেবস্মিতা রায় হোলি চাইল্ড স্কুলের দিবা বিভাগে ৯ মাস ধরে শিক্ষকতা করেছেন। দ্বিতীয় ভাষা বাংলা পড়িয়েছেন ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ১৭ জন পড়ুয়াকে। শুক্রবারও গিয়েছিলেন স্কুলে। বিকেলে হঠাৎ চিঠিটা পাওয়ার পরই জানতে পারেন নতুন শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়ার সংখ্যা কমায় তাঁকে অব্যহতি দিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

 

Read more!
Advertisement

RECOMMENDED

Advertisement