ভিক্টোরিয়ার সরকারি অনুষ্ঠানের পর ফের হাওড়া স্টেশন। ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) পৌঁছতেই তাঁকে উদ্দেশ্য করে জয় শ্রী রাম ধ্বনি উঠল বিজেপি সমর্থকদের দিক থেকে। যার জেরে মমতা মঞ্চে উঠলেন না। তারপর থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান দেওয়া নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা শুরু হয়েছে। পরিস্থিতিতে বিজেপি কর্মীদের কোনও ভুল দেখতে পাচ্ছেন না বঙ্গ বিজেপির নেতারা। কিন্তু ব্যতিক্রম সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া (SS ahluwalia)। বিষয়টিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ।
আলুওয়ালিয়া তাঁর কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি জয় শ্রী রাম স্লোগান দেওয়াকে কোনওভাবেই সমর্থন করেন না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আলুওয়ালিয়া বলেছেন, 'নানান রকমের মানুষ এ ধরনের অনুষ্ঠানে আসেন। তবে রাষ্ট্রীয় পর্বে ভারত মাতা কি জয় বলা উচিত।' মনে করা হচ্ছে, এই মন্তব্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর ফারাকটা স্পষ্ট করে দিয়েছে বর্ষীয়ান সাংসদ। এদিন, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস থেকে শক্তিগড় স্টেশনে নেমে এই মন্তব্য করেন বিজেপির ওই সাংসদ।
অন্যদিকে, মঞ্চে মমতার না ওঠার ব্যাপারে শুভেন্দু এদিন বলেছেন, নন্দীগ্রামের পরাজয় এখনও হজম হয়নি। এরপরে অনেক অনুষ্ঠান হবে, তা বাড়িতে বসে দেখবেন।
আরও পড়ুন-ফিরহাদ বললেন, 'রামের অপমান,' শুভেন্দুর কটাক্ষ, 'হারের যন্ত্রণা ভুলতে পারছেন না'
এদিন জয় শ্রী রাম ধ্বনি শুনে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে মঞ্চে উঠতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণকে। দেখা যায় মমতার সামনে গিয়ে হাতজোড় করে তাঁকে মঞ্চে ওঠার জন্য অনুরোধ করছেন রেলমন্ত্রী। আবার বাঁকুড়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে দেখা যায়, যারা স্লোগান তুলছিল তাদের চুপ করানোর চেষ্টা করতে। কিন্তু তার পরেও মমতাকে মঞ্চে তোলা যায়নি। নীচে সিঁড়ির পাশে চেয়ার নিয়ে বসেছিলেন তিনি।
অনেকের মতে, অশ্বিনী বৈষ্ণ এদিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি যে সৌজন্য দেখিয়েছেন, সেটা কার্যত শুভেন্দু তথা বাংলা বিজেপির অনেকের কাছে শিক্ষণীয় হতে পারে। সরকারি অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক স্লোগান কখনও কর্মীদের সুস্থ্য আচরণ হতে পারেনা বলেও মনে করা হচ্ছে।
অটলবিহারী বাজপেয়ীর খুবই আস্থাভাজন বর্ষীয়ান নেতা আলুওয়ালিয়া। বাজপেয়ী সরকারের সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক বন্ধুত্ব। বরাবরই রাজনৈতিক শিষ্টাচার রেখে চলেন তিনি। তবে বাংলা বিজেপির তরফে এদিন ব্যতিক্রমী হয়েই থাকলেন তিনি।
শিয়ালদা মেট্রোর উদ্বোধনের সময় থেকেই দেখা যাচ্ছিল, কেন্দ্রের কর্মসূচীকে দলীয় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলার বিজেপি শিবির। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা থেকে বিজেপি কর্মীদের অতিসক্রিয়তা প্রকট হচ্ছিল। এদিনও তার অন্যথা হয়নি। তবে এদিনের ঘটনার পাল্টা হিসেবে বাংলায় কেন্দ্রের ফের কোনও কর্মসূচীতে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান উঠলে সেই পরিস্থিতির দায়ী হবেন শুভেন্দুরাই, এমনটাও মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
আরও পড়ুন-মমতা ঢুকতেই স্লোগান উঠল 'জয় শ্রীরাম', তারপর যা ঘটল