৯ অগাস্ট নবান্ন অভিযানের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আরজি কর-কাণ্ডের বর্ষপূর্তিতে সুবিচার চেয়ে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন নির্যাতিতার মা-বাবা। সমর্থন দিয়েছে বিজেপি।
'নবান্ন অভিযান' কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার দাবিতে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন হাওড়ার এক ব্যবসায়ী। তাঁর বক্তব্য, নবান্ন অভিযানের জেরে হাওড়াবাসীদের হেনস্থা হতে হয়। সেই সঙ্গে থমকে যায় ব্যবসা-বাণিজ্য। তবে জনস্বার্থ মামলাকারীর আবেদনে সাড়া দেয়নি আদালত। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র পর্যবেক্ষণ, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মৌলিক অধিকার। ফলে এই ধরনের প্রতিবাদ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সরকার চাইলে আইনানুগভাবে আয়োজকদের বিকল্প জায়গা দিতে পারে।
সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, গত বছর নবান্ন অভিযানকে ঘিরে ব্যাপক হিংসা ছড়িয়েছিল। ৪০-এর বেশি পুলিশ কর্মী জখম হয়েছিলেন। একটি চোখ হারিয়েছিলেন এক পুলিশ কর্মী। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সরকারি সম্পত্তিও। হাইকোর্টের নির্দেশ, হিংসা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ মিছিল করতে হবে।
বিচারপতিদের মতে, সরকারি আধিকারিক, পুলিশ, সরকারি ভবন এবং সাধারণের সম্পত্তির ক্ষতি না করে যে কোনও নাগরিক শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে অংশ নিতে পারেন। সংবিধানের ৫১এ(i) অনুচ্ছেদের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে আদালত। ওই অনুচ্ছেদ মোতাবেক, সাধারণের সম্পত্তি রক্ষা করা এবং হিংসা থেকে দূরে থাকা সকল নাগরিকের কর্তব্য।
গত বছর ৯ অগাস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে মেলে তরুণী চিকিৎকের দেহ। ধর্ষণ করে খুন করা হয় তাঁকে। ঘটনায় সঞ্জয় রায় নামে সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওঠে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই হাতে নেয় তদন্ত। সিবিআইয়ের তদন্তেও উঠে আসে খালি সঞ্জয়ের নাম। তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবনের সাজা দেয় নিম্ন আদালত। নির্যাতিতার বাবা-মা এবং জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, ঘটনায় সঞ্জয় রায় ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি জড়িত। সদ্য দিল্লিও গিয়েছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা। সিবিআই কর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। তবে সিবিআইয়ের ভূমিকায় খুশি নন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, সিবিআই নাকি বলেছে, একাধিক অভিযুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ তদন্তে মেলেনি।