জ্যোতি বসু এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একজন প্রাক্তন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী, অপরজন ১০ বছরের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী, যিনি তাঁর তৃতীয় ইনিংস শুরু করেছেন। সেই জ্যোতি বসুর জন্মদিন আগামী ৮ জুলাই। সেই উপলক্ষে বড় করে জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত একটি সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ চালু করতে চলেছে সিপিএম। এই গবেষণা কেন্দ্রে জন্য রাজারহাটে ৫ একর জমি অনুমোদন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশ্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের নামে কেনা হয়েছে জমিটি। ট্রাস্টের সচিব রবীন দেব। এতে রয়েছেন বিমান বসুসহ বিশিষ্ট নেতারা। গতবছর ৮ জুলাই থেকে জমিতে বোর্ড লাগিয়ে একাংশে বৃক্ষরোপণও করা হয়েছে।
এদিকে গত একসপ্তাহে এই গবেষণা কেন্দ্রের জন্য আলিমুদ্দিনে একাধিক বৈঠক হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই জমিতে কোনওরকম বাধা বিপত্তি না দিয়ে বরং সহায়তা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়ে চেয়েছেন। আর সেই বার্তাটি হল, রাজনৈতিকভাবে কংগ্রেস ও সিপিএমের সঙ্গে তাঁর বিরোধ আছে, তবে তিনি জ্যোতি বসুকে ব্যক্তিগতভাবে সম্মান করেন এবং তিনি বামপন্থীদের বিরুদ্ধে নন। অর্থাৎ রাজনৈতিকভাবে সিপিএম কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই থাকলেও বামপন্থার প্রতি তিনি আজও আস্থাশীল।
প্রসঙ্গত, অতীতে দেখা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন এবং অবসর গ্রহণের পরেও জ্যোতি বসুর জন্মদিনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি মিষ্টি ও উপহারও নিয়ে গিয়েছেন। আর তাই নিয়ে পরবর্তীতে বিতর্কও হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে মমতা বলেছিলেন, তিনি ব্যক্তিগত শিষ্টাচারে বিশ্বাসী। এমনকি জ্যোতি বসু যখন অসুস্থ ছিলেন তখনও মাঝে মাঝে তাঁকে দেখতে যেতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জ্যোতি বসুর নামে গবেষণা কেন্দ্র তৈরির চেষ্টা সিপিএমের আমল থেকেই ছিল। একটা সময় তা লন্ডনে তৈরি করা হতে পারে বলে শোনা যায়। তারপর চণ্ডীগড়ে হরকিষাণ সিং সুরজিৎ ও জ্যোতি বসুর নামে যৌথভাবে একটি গবেষণা কেন্দ্র তৈরির জন্য জমি কেনার চেষ্টাও হয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। এবার খোদ কলকাতা শহরেই এটি তৈরি হতে চলেছে। সেখানে থাকবে জ্যোতি বসু ও বাম আন্দোলন সংক্রান্ত সংগ্রহশালা, গ্রন্থাগার, প্রদর্শনশালা ও অডিটোরিয়াম। থাকবে অতিথিদের জন্য থাকার ব্যবস্থাও। যাঁরা বাম আন্দোলন নিয়ে গবেষণা করতে চান, তাঁদের জন্য তথ্য ও নথিপত্রের সংগ্রহও থাকবে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই সক্রিয়ভাবে কাজে নেমে পড়েছেন রবীন দেব। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিক থেকে এটিকে একটি মোক্ষম চাল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
আরও পড়ুন - মাত্র ২ দিনে কীভাবে Six pack abs বানালেন এই যুবক? ভিডিও Viral