IIM কলকাতার ক্যাম্পাসে ধর্ষণের মামলার তদন্তের জন্য ৯ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন ডিসি (সাউথ-ওয়েস্ট ডিভিশন) রাহুল দে।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে কোনও খামতি রাখা হবে না। আর সেই উদ্দেশ্যেই উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের নিয়ে এই বিশেষ তদন্তকারী টিম তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় অভিযোগকারী ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করলেও, তাঁর বাবা সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন যে, কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। এই দুই বিপরীত অবস্থান ঘিরে নতুন করে রহস্য দানা বাঁধছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় হরিদেবপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এক মহিলা। পেশায় তিনি একজন সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলর। তিনি দাবি করেন, আইআইএম কলকাতার হোস্টেলে তাঁকে দ্বিতীয় বর্ষের এক এমবিএ পড়ুয়া ডেকে পাঠান।
অভিযোগ, ওই ছাত্রের ঘরে গেলে তাঁকে কোল্ড ড্রিঙ্কস ও পিৎজা খাওয়ানো হয়। তারপরেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন। অচেতন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পরে বুঝতে পারেন, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ নম্বর ধারা (ধর্ষণ) ও ১২৩ নম্বর ধারা (বিষ বা মাদক প্রয়োগ)-এ মামলা দায়ের করে। রাত ১২টা নাগাদ আইআইএম-এর হোস্টেল থেকেই গ্রেফতার করা হয় ওই পড়ুয়াকে।
তবে শনিবার দুপুরে এই ঘটনায় নয়া মোড় আসে। অভিযোগকারী মহিলার বাবা সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, 'আমার মেয়ে সুস্থ আছে, বিশ্রাম নিচ্ছে।'
তাঁর কথায়, শুক্রবার রাত ৯টা ৩৪ মিনিট নাগাদ তিনি ফোনে খবর পান, তাঁর মেয়ে অটো রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে অচেতন হয়ে গিয়েছেন। পরে পুলিশ তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারী প্রথমে ঠাকুরপুকুর থানায় যান। পরে তাঁকে এক মহিলা পুলিশ আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে হরিদেবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়, কারণ ঘটনাস্থল ওই থানার অন্তর্গত। সেখানে তিনি নিজের হাতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
আলিপুর আদালতে পুলিশ জানায়, ১১ জুলাই সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। কাউন্সেলিংয়ের নাম করে ওই মহিলাকে হোস্টেলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের দাবি, ‘'অভিযুক্ত পড়ুয়া মহিলাকে বলপূর্বক শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করেছে।' অভিযুক্তের পোশাক ও মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
তদন্তে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে মামলায় আরও কয়েকটি ধারা যোগ করা হয়েছে। ৬৪, ১২৩ ছাড়াও ১২৭(২), ১১৫(২), ৭৬ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
মামলার তদন্তভার এখন SIT-র হাতে। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, দ্রুতই এই ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে।