যাদবপুরের ঘটনায় এবার কলকাতায় এসে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি বলেন, 'আমি ইউজিসির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা রিভিউ করেছে। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টে ইউজিসি সন্তুষ্ট না। রাজ্যপাল আচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন। বিষয়টিতে রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। তাঁরা দায়িত্ব থেকে পালাতে পারে না।'
'নিউমার্কেট বিজনেস অ্যান্ড ইয়ং সোসাইটি'র উদ্যোগে আজ হল খুঁটিপূজা। ৬৪ বছরে পদার্পণ করল এবছরের দুর্গা পুজো। খুঁটি পুজোয় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান-সহ রাজ্য বিজেপির জেলা সভাপতি তমঘ্ন ঘোষ সহ বিজেপির বিভিন্ন নেতারা। সেখানে তাঁকে জানতে চাওয়া হয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে। মন্ত্রী বলেন, 'খুবই উদ্বেগের বিষয়। নিন্দার কোনও ভাষা নেই। র্যাগিংয়ের জন্য একটা ছোট ছেলের জীবন চলে গেল। রাজ্য সরকার অসহায়তা প্রকাশ করেছে। ইউজিসিকে আমি পরামর্শ দিয়েছি। তারা কথা বলছে। ব়্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অ্যান্টিং র্যাগিং সেল কী কাজ করছিল। সিসি টিভি লাগানো ছিল কী না। আগের ভিসির আমলে আদালতের নির্দেশ সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। কিন্তু সেগুলো কেন খোলা হল। বাইরের লোকজন কেন হস্টেলে থাকত কেন। যাদবপুর বিশ্বের একটি নামী বিশ্ববিদ্যালয়। এটার বদনাম আমরা হতে দেব না।'
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে গত ১০ অগস্ট নদিয়া থেকে পড়তে আসা বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তার পরেই প্রকাশ্যে এসেছে হস্টেলের একাধিক অব্যবস্থার ছবি। অভিযোগ, হস্টেলে সিনিয়র ছাত্র, বিশেষ করে প্রাক্তনীদের দাপট ছিল চোখে পড়ার মতো। এমনকি, হস্টেল সুপার থেকে শুরু করে নিরাপত্তারক্ষী, সকলেই এই প্রাক্তনীদের সমীহ করে চলতেন। তাঁদের কোনও কাজে বাধা দেওয়ার সাহস পেতেন না। এই প্রাক্তনী এবং কয়েক জন সিনিয়র ছাত্রের বিরুদ্ধে গত ৯ অগস্ট নদিয়ার ওই ছাত্রকে র্যাগিং করার অভিযোগ উঠেছে। তার ফলেই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে নীচে পড়ে গিয়েছিলেন ওই ছাত্র। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ছাত্রও হস্টেলে অন্য এক জনের অতিথি হিসাবে থাকছিলেন। তাঁর কাছ থেকেও কোনও রকম টাকা নেওয়া হয়েছিল কি না, এখনও জানা যায়নি।
যাদবপুরের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন এবং বর্তমান পড়ুয়া মিলিয়ে মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতেই এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও তিনি হস্টেলের আবাসিক নন। ধৃত জয়দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সেই রাতে পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বাকি ধৃতেরা হলেন, সৌরভ চৌধুরী (প্রাক্তনী, গণিত বিভাগ), মনোতোষ ঘোষ (সমাজবিদ্যা, দ্বিতীয় বর্ষ), দীপশেখর দত্ত (অর্থনীতি, দ্বিতীয় বর্ষ), মহম্মদ আরিফ (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), আসিফ আফজল আনসারি (চতুর্থ বর্ষ, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), অঙ্কন সরকার (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), অসিত সর্দার (প্রাক্তনী), সুমন নস্কর (প্রাক্তনী), সপ্তক কামিল্যা (প্রাক্তনী), শেখ নাসিম আখতার (রয়াসন, প্রাক্তনী), হিমাংশু কর্মকার (গণিত, প্রাক্তনী) এবং সত্যব্রত রায় (কম্পিউটার সায়েন্স)।