দীর্ঘদিন তাঁরা ছিলেন একই দলে। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের মাস কয়েক আগে আলাদা হয় পথ। তার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা শুভেন্দুর নাম মুখে আনেননি মমতা। তবে বিরোধী দলনেতাকে বিঁধেছেন বাক্যবাণে। মমতার ডাকা বৈঠকেও থাকতে দেখা যায়নি শুভেন্দুকে। শুক্রবার শীতের বেলায় বিধানসভায় বিরল সৌজন্য। এই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গেলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে তিনি একা যাননি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং মনোজ টিগ্গা।
বৈঠক নেহাত সৌজন্য বলে দাবি করেছেন দুজনেই। মমতা জানান,'শুভেন্দুকে চা খেতে ডেকেছিলাম।' তাঁর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর কথায়,'এটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ।'
২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূল ছেড়ে অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে তৃণমূলের সঙ্গে তার আগে তৈরি হয়েছিল দূরত্ব। মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামে দুজনের লড়াই হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতির আলোচনার ভরকেন্দ্র। ২০২১ সালে তৃণমূল বিরাট জয়লাভ করলেও নন্দীগ্রামে হারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনে প্রার্থী হন। জেতেনও। সেই থেকে প্রাক্তন দলনেত্রীকে মমতাকে ‘কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করতে থাকেন শুভেন্দু। বিধানসভা ভোটের প্রচারে মমতাকে নানা নামে কটাক্ষও করতে শোনা গিয়েছিল শুভেন্দুকে। তবে মমতাও পাল্টা দিয়েছেন সময়ে সময়ে। দাদামণি বলে কটাক্ষ করেছেন। তবে নাম নেননি।
সাম্প্রতিককালে রাজ্যে তৃণমূল বিরোধিতায় শুভেন্দু অধিকারী হয়ে উঠেছেন বিজেপির শীর্ষ মুখ। শাসক দলও তাঁকে বিঁধতে ছাড়ছে না। দিন কয়েক আগে নতুন রাজ্যপালের শপথগ্রহণ ঘিরে ফের শাসক-বিরোধী রাজনীতি তুঙ্গে ওঠে। বিরোধী দলনেতা পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদার অথচ তাঁকে সামনের সারির আসন দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগে অনুষ্ঠানে যাননি শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা সরকার জানায়, এটা একটা রীতি। এর কোনও নিয়ম নেই। এই প্রেক্ষাপটেই মমতা-শুভেন্দুর 'চা-চক্র'নিয়ে স্বাভাবিকভাবে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
আরও পড়ুন- হাসপাতালে দালাল চক্র? BJP বিধায়কের প্রশ্নে যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী