তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন তিনি। এই ঘোষণা করেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিজেপি বাদে সাংগঠনিক নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় অন্য রাজনৈতিক দলকেও। যদিও অনেকেই আসেননি।
তৃণমূলের তরফে বাংলার বাইরেও বিভিন্ন রাজ্যে সংগঠন বিস্তারের কাজ চলছে। চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হয়েই বাংলার বাইরে সংগঠন বিস্তারের বার্তা দিযলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে তৃণমূল লড়াই করবে। প্রসঙ্গত, এবারের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে সপাকে সমর্থন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারা কোনও প্রার্থী দেয়নি। তবে উত্তরপ্রদেশে তিনি প্রচারে যাবেন। তারই মধ্যে ২৪-এর লোকসভা ভোটে লড়ার ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পেগাসাস ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'কিছু বলতে গেলেই দুর্বিষহ নাভিশ্বাস, পেগাসাস পেগাসাস। পিকে, অভিষেক সবাই ভুক্তভোগী। ওদের ফোন ট্যাপ হয়েছে। এটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আমরা চাই এর বিচার হোক। পেগাসাসের বিরুদ্ধে মানুষ লড়বে। বিজেপির দালাল আছে কয়েকজন। তিনি তো সবচেয়ে বড় পেগাসাস।'
আরও পড়ুন : হাওড়ায় বধূকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, পুলিশের মদতে হাসপাতালে
বাজেট নিয়ে বিজেপি আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোরপাধ্যায়। বলেন, 'বাজেটে শুধু হিরে আর হিরে। হিরের তরকারি খাবে, চচ্চড়ি বানাবে। সাধারণ মানুষের কোনও কথা নেই। আর এসবের প্রতিবাদ করতে গেলেই পেগাসাস। অভিষেক-সহ আরও অনেকেই আছে এখানে। তারা ভুক্তভোগী। দেশের মানুষ আতঙ্কে আছে। এদের নিয়ে কিছু বলার নেই। কোনও পরিকল্পনা নেই।'
ভারতের সঙ্গে তার প্রতিবেশী দেশগুলির সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'দেশের নিরাপত্তার জন্য এসব প্রশ্ন তুলি না আমরা। তবে আমরা আজ বলতে বাধ্য হচ্ছি। ভারতের সঙ্গে নেপালের, বাংলাদেশের সম্পর্ক কেমন? কেন এমন সম্পর্ক? এগুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলা দরকার। তবে বলবার কেউ নেই। দেশে অরাজকতা চলছে।'
মমতার কথায়, 'বাংলার তৃণমূল কর্মীদের ধন্যবাদ। তাঁরা আমাদের সঙ্গে আছেন। আপনারা আমাদের শক্তি। আমাদের আপনারা কথা দিন আমার সঙ্গে থাকবেন। তাহলে আমি ভারতজুড়ে কাজ করতে পারব। আমার লক্ষ্য বিজেপিকে দেশে থেকে হটানো। দেশে খুব কম দলই আছে যারা আমাদের মতো সংগ্রাম করে উঠে এসছে। আমরা কিন্তু লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছি।
বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, তারা ১০০ দিনের কাজের টাকাও কমিয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা এই সরকার ভাবে না । গরিব মানুষের কথা ভাবে না। তারপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, 'কেউ প্পতিবাদ করে না বলেই বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। আমি প্রতিবাদ চাই। বড় রকমের প্রতিবাদ। নোটবন্দী থেকে ব্যাঙ্কবন্দী, পেগাসাস থেকে আলাদত বন্দী সবটাই বন্ধ করে দিয়েছে এই কেন্দ্রীয় সরকার। তাই আজ আমি চাইছি উত্তাল ছাত্র যৌবন। প্রতিবাদ করতেই হবে। খুব খারাপ দিন আসছে। কখনও পুলওয়ামা করছে তারপর ভোট পার করে দিচ্ছে। আসল রহস্য একদিন না একদিন সামনে আসবেই। তোমরা পাল্টা ঘেউ ঘেউ করবে, আমিও পাল্টা
আরও পড়ুন : থিমের লড়াই জেলায়, মহাসমারোহে হুগলিতে পালিত হচ্ছে সরস্বতী পুজো
তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, 'মার্চ পর্যন্ত সাংগঠনিক নির্বাচনের সময় ছিল, কিন্তু ফেব্রুয়ারিতেই করে দিলাম। বাংলার ছেলেমেয়েদের হাতে অনেক কাজ এখন। নিজেকে বিশ্বাস রাখতে হবে। তৃণমূল করতে গেলে যে রাজ্যে যারা বিশিষ্ট, ভারত সম্পর্কে জানা দরকার, রাজ্য সম্পর্কেও জানতে হবে। তৃণমূল সম্পর্কেও জানতে হবে। আমি প্রত্যেকটা ঘটনা বইয়ে লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। অনেকেই এখনকার বামেদের অত্যাচারের কথা জানেন না। এখন ত্রিপুরায় অত্যাচার হচ্ছে, জেলে ঢোকানো হচ্ছে, গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে।'