রাজ্যে গঙ্গাভাঙনের জেরে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি ক্ষয়ক্ষতির কথা লিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা নিক বলে চিঠিতে অনুরোধ করেছেন।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, গঙ্গা-পদ্মা ভাঙনের জেরে মালদা, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া জেলায় কৃষি জমি ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। গত দু'দশক ধরে এই সমস্যা। ফরাক্কা ব্যারেজের নির্মাণের পর গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তন এবং নদীবক্ষে পলি জমে যাওয়াই এই সমস্যার মূল কারণ। এজন্য ২০০৫ সালে ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের সীমানা বাড়ায় জলসম্পদ মন্ত্রক। নদী ভাঙন রোধ ও নদীর পার বাঁচাতে সীমানা ৪০ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছিল। অথচ নদীর ভাঙন রোধে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। উল্টে ১২০ কিলোমিটার সীমানা বাড়ানো হয়। তার ফলে মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলার ৪০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার ১৫টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আবার ২০১৭ সালের ১১ জুলাই চিঠি দিয়ে সীমানা কমিয়ে দেয় জলসম্পদমন্ত্রক।' ওই সীমানা বাড়ানোর জন্য় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেও কোনও ব্য়বস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভাঙন রোধে রাজ্য় সরকারের খরচের পরিসংখ্যানও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ৩১টি বিপজ্জনক এলাকা চিহ্নিত করে ১৬৮.৪৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে রাজ্য সরকার। ২০২১ সালে বর্ষায় আরও ভাঙন হয়েছে। সম্প্রতি আরও ৮০.৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। যদিও এটা যথেষ্ট নয়। আরও বেশি অর্থের দরকার। নতুন করে পর্যালোচনা করা হয়েছে। ২৮.৮০ কিলোমিটার এলাকায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি। সংস্কারে লাগতে পারে ৫৭১ কোটি টাকা। এত টাকা জোগাড় করা রাজ্য সরকারের পক্ষে কঠিন। ২০২১-এর ৩১ অগাস্ট জলশক্তি মন্ত্রকের কাছে দরবারও করে এসেছেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। কিন্তু কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রীকে মমতার অনুরোধ, ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের সীমানা আগের মতোই বাড়ানো হোক। এবং নদীর পার রক্ষায় প্রকল্প শুরু করুক কেন্দ্র। এছাড়া মহানন্দা, ফুলহার, আত্রেয়ী, পুনর্ভবা নদীর পারে ২১টি ব্লকের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ২০১৭ সালের বন্যায় ৪৯৭৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ২৫৭০ কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছিল। ২০২১ সালের মে বন্যা ব্যবস্থা প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছিল গঙ্গা বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে।
আরও পড়ুন- 'বাপ্পিদা বলতেন দু'টো গান লিখে দাও না, গাইব'