অপারেশন সিঁদুরের পর প্রথমবার বাংলায় এসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ আলিপুরদুয়ারে সভা রয়েছে তাঁর। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের এক বছর আগের এটাই মোদীর প্রথম সফরও বটে। সেই কর্মসূচির আগে ‘এক্স’ হ্যান্ডলে পোস্ট করে ‘দুর্নীতি এবং প্রশাসন’ নিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করেন মোদী। রাজ্যের বর্তমান তৃণমূল সরকারের দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক অদক্ষতা নিয়ে মানুষ বিরক্ত বলে মন্তব্য করলেন তিনি। এই নিয়ে অবশ্য পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও।
প্রধানমন্ত্রীর পোস্টকে ট্যাগ করে তৃণমূল এক্স হ্যান্ডলে লিখেছে, ‘পরিযায়ী পাখিরা বাংলায় তাদের মরশুমি ভ্রমণ শুরু করেছে। একটা সহজ প্রশ্ন তাদের করতেই হয়, কেন্দ্রীয় সরকার কেন রাজ্যের ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকার ন্যায্য বকেয়া আটকে রেখেছে?’ এরপর হ্যাশট্যাগ দিয়ে তৃণমূল আরও লিখেছে, ‘আয়ে হো তো বাতাকে যাও।’ গেরুয়া উত্তরীয় পরা একটি পরিযায়ী পাখির ছবিও লেখার সঙ্গে পোস্ট করা হয়েছে তৃণমূলের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডল থেকে। পাখিটির গলায় উত্তরীয়তে বিজেপির প্রতীক পদ্মফুল আঁকা।
মোদীর সফর নিয়ে শাসকদলের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অত্যন্ত বিচক্ষণের মতো আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী কেন্দ্রের প্রতি সৌজন্য দেখিয়েছেন। বারবার তিনি বলছেন, যে কোনও সিদ্ধান্তে কেন্দ্রের পাশে রয়েছেন। এই সৌজন্যের পালটা তাঁর সরকারকেই আক্রমণ করছে কেন্দ্র! ২ বছর ধরে মণিপুর জ্বলছে, অরাজক পরিস্থিতি। ওখানে একবারও তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) যাওয়ার সময় হল না, অথচ ছাব্বিশের ভোটের আগে বাংলায় আসছেন! সে গণতান্ত্রিক দেশে যাঁর যেখানে ইচ্ছা যেতেই পারেন। কিন্তু তার জন্য তৃণমূল সরকারকে কেন আক্রমণ? এখানে এই সরকার যেভাবে উন্নয়নের কাজ করছে, তা গোটা দেশে বিরল।' কুণাল এ-ও বলে দিয়েছেন, রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করা হলে পাল্টা ফেরত পেতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।
কড়া ভাষায় জবাব দিয়ে কুণাল বলেন, 'এই সময়ে এমন রাজনৈতিক পোস্ট না করলেই পারতেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গোটা দেশ একসঙ্গে। সেখানে দাঁড়িয়ে এখন রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করেছেন মোদীজি।' তিনি আরও বলেন, 'আপনি কাশ্মীরের গ্রামে যাননি, তৃণমূল গিয়েছে। আপনি দু’বছরে মণিপুরে যাননি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিনিধি দল নিয়ে গিয়েছেন। এই সময় রাজনৈতিক সফরে এসে বাংলায় বিষ ছড়াতে আসছেন? মিথ্যা পোস্ট করছেন।' কুণাল ঘোষ প্রধানমন্ত্রীকে 'রাজনৈতিক পর্যটক' আখ্যা দেয় বলেন,'ডুয়ার্সে অনেক পর্যটক আসে, কিন্তু আপনি এসেছেন রাজনৈতিক পর্যটক হয়ে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক সৌজন্য দেখাচ্ছেন। অথচ আপনি মিথ্যা প্রচার করে বাংলার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন।' সেইসঙ্গে কুণাল বলেন, সিঁদুরকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা যাবে না এবং বাংলার বকেয়া মেটাতে হবে।