কলকাতা হাইকোর্টে মামলা লড়তে এসে বিক্ষোক্ষের মুখে পড়লেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী পি চিদম্বরম। নিজের দল কংগ্রেসের আইনজীবীরাই দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। জানা যাচ্ছে মেট্রো ডেয়ারি মামলায় কেভেন্টার্সের হয়ে সওয়াল করায় চিদম্বরমকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান হয়। এক মহিলা আইনজীবীকে তাঁকে তৃণমূলের দালাল বলতেও শোনা যায়।
তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের তরফে মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার বিক্রির মামলা লড়তে কলকাতায় এসেছেন পি চিদম্বরম। এই মামলা দায়ের করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। প্রসঙ্গত, মেট্রো ডেয়ারির হাত বদলের পিছনে দুর্নীতি আছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কী কারণে মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে, তা জানতে হাইকোর্টে মামলা করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন অধীর।
রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা মেট্রো ডেয়ারির ৪৭% শেয়ার একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে বিক্রি নিয়ে আগেই সরব হন অধীর চৌধুরী। অধীরের অভিযোগ, যে সংস্থার কাছে ৪৭% শেয়ার বিক্রি হয়েছে, তারা সস্তায় কেনা সেই শেয়ারের অংশ চড়া দামে অন্য এক সংস্থাকে বিক্রি করেছে। কংগ্রেস সভাপতির আরও অভিযোগ, মেট্রো ডেয়ারির পুরোপুরি বেসরকারিকরণের সময়ে সংস্থা বাছাইয়ে স্বচ্ছতা মানা হয়নি। আদতে, ওই সংস্থার শেয়ার দর কত হওয়া উচিত, তা বৈজ্ঞানিক উপায়ে নির্ধারিত হয়নি। শুধু রাজনৈতিক কারণে একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে মেট্রো ডেয়ারি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। যার কিছুটা অংশ বিক্রি করে ওই সংস্থা বিপুল মুনাফা করেছে।
অধীর চৌধুরীর করা এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে এসে কংগ্রেসপন্থী আইনজীবিদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন বর্ষিয়ান কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী পি চিদম্বরম। মেট্রো ডিয়ারির শেয়ার বিক্রি সংক্রান্ত মামলায় কেভেন্টার্স সংস্থার হয়ে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে সওয়াল করতে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা চিদম্বরম। এরপর হাই কোর্ট চত্বরের মধ্যেই তাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেসপন্থী আইনজীবীরা। বিক্ষোভে সামিল ছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তব বাগচি নিজেও। দেখা যায় কংগ্রেসপন্থী আইনজীবীরা তার গাড়ি আটকে চিদাম্বারামকে ঘিরে ধরে গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন।
কংগ্রেসপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, এখানে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। মানুষের টাকা নিয়ে কেন তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন চিদম্বরম? রাজ্য সরকারের হাতে থাকা মেট্রো ডিয়ারির শেয়ার সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে কেভেন্টার্সকে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বিক্ষোভকারী কংগ্রেসপন্থী আইনজীবীদের অভিযোগ, যেখানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নিজে জনস্বার্থ মামলাটি করেছেন, সেখানে বিপক্ষের হয়ে কেন সওয়াল করতে এসেছেন তাদেরই দলের একজন বর্ষিয়ান নেতা? এতে দলের কর্মীদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে বলে দাবি করে হাইকোর্ট চত্বরে বিক্ষোভ দেখানো হয়।