এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের (Kaliaganj Minor Murder) অভিযোগে উত্তপ্ত রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) কালিয়াগঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে ৭ দিনের জন্য কালিয়াগঞ্জের একাংশে ১৪৪ ধারা (Section 144 Imposed) জারি করেছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। কালিয়াগঞ্জে গিয়েছিলেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো।
কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ (Kaliagunj)। দফায় দফায় পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন উত্তেজিত গ্রামবাসী। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। বিক্ষোভ হটাতে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে, লাঠিচার্জ করতেও দেখা গেছে। পাল্টা পুলিশের দিকে ধেয়ে এসেছে ইটবৃষ্টি।
আজ, রবিবার সকাল থেকেই এলাকা থমথমে। পুলিশ গত কাল থেকেই চত্বরের দখল নিয়েছিল। এলাকা সুনসান। সব দোকান-পাট বন্ধ। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। প্রশাসনের তরফ থেকে ঘোষণা, আগামী ৭ দিন ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে নিখোঁজ ছিল এক নাবালিকা। শুক্রবার সকালে একটি পুকুরে উদ্ধার হয় তাঁর মৃতদেহ। মৃতা তরুণী এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে, প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
কালিয়াগঞ্জ-দুর্গাপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ ও পরে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিশ মৃতদেহ তুলতে গেলে, বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। এরপরই দু-পক্ষের মধ্যে বেঁধে যায় খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশের দিকে উড়ে আসতে থাকে ইট। পাল্টা ইট ছোড়ে পুলিশও। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। চলে ব্যাপক লাঠিচার্জ। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মৃত নাবালিকার সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। মৃতের পরিবারের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবক ও তাঁর বাবাকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগে, আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইটারে অভিযোগ করেছেন, 'বাংলায় আরও এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন, দুঃখের বিষয় ভাইপোর নবজোয়ারের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত পুলিশ, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে যার মূল্য চোকাতে হচ্ছে মহিলাদের, রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে দুর্বৃত্তরা সাহস পাচ্ছে।'
একইভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি লেখেন, 'আপনার রাজত্বে বাংলা নারী নির্যাতনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। আপনি উত্তরপ্রদেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন! ঘটনার পরে টুইটারে যে ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা টেনে নিয়ে যাচ্ছে নাবালিকার দেহ। কমিশনের বক্তব্য যেভাবে দেহটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা নির্মম। সেই নিয়েও বেশ বিরক্ত জাতীয় মহিলা কমিশন।