রাজ্যের সব বিদ্যালয়ের আচার্যের পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার বিধানসভায় চিরকুটে ভোটগ্রহণে পাশ হল ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্স অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২। তা পাশও হয়ে গেল। তার পরই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে নালিশ করেন বিজেপি বিধায়করা। রাজভবনেই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল জানান,'উপাচার্যদের নিয়োগ নিয়ে স্পষ্ট বলতে চাই, রাজ্যপালের অনুমতি ছাড়া হতে পারে না। আমার নিয়োগের অধিকার রয়েছে। সেটা কীভাবে রক্ষা করতে হয় সেটা জানি।'
এ দিন বিধানসভায় ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্স অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০২২ পেশ করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সেই সময় বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন ১৮৬ জন বিধায়ক। চিরকূটে ভোটগ্রহণের মাধ্যমে বিলটি পাস হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করার বিরোধিতায় বিধানসভা থেকে সোজা রাজভবনে যান বিজেপি বিধায়করা। তাঁদের পাশে নিয়েই রাজ্যপাল সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়ম, কয়লা ও গরুপাচারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন জগদীপ ধনখড়। তিনি বলেন,'সংবিধান মেনে কাজ করি। নিজের শপথ ভুলব না। ১০০ শতাংশ কাজ করব।'
তিনি আরও বলেন,'সংবাদমাধ্যম থেকে প্রতিদিন জানতে পারছি, রাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আনা হচ্ছে। এমনকি উপাচার্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রেও। কে আচার্য হবেন? সব বিল আমি আইনি ও সাংবিধানিক দিক থেকে খতিয়ে দেখি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে বিলগুলি দেখি। নতুন পদ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা হতে পারে না। এখানে আইনের শাসন চলছে। রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক ও সংবিধানের দাস। কোনও বিল আমি পক্ষপাতিত্ব করে দেখি না। আইনের মেনে বিল আনা হলে স্বাক্ষর করি। আর বিল সংবিধান ও আইন লঙ্ঘন করলে কথা বলে সমাধানের পথ খুঁজি। সংবিধানের নীতিতে অমান্য করতে দেব না।'
জাতীয় শিক্ষানীতি পশ্চিমবঙ্গে চালু না করা নিয়েও রাজ্য সরকারকে নিশানা করেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়,'জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু হয়নি বাংলায়। বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।'
শিক্ষক নিয়োগে বেনিয়ম নিয়ে রাজ্যপাল বলেন,'হাজার হাজার ছেলেমেয়ের কেরিয়ার ধ্বংস করা হয়েছে। কঙ্কাল বেরিয়ে আসছে প্রতিদিন। সরকারের শীর্ষস্তরে চলে গিয়েছে দুর্নীতি। দুর্নীতি প্রতিদিন বাড়ছে। দেশে এর আগে নিয়োগে এমন দুর্নীতি দেখা দেয়নি। যুবসমাজের জীবন নিয়ে খেলার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। পরীক্ষা দেয়নি, মেধাতালিকায় নেই, তাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে।'