
কলকাতা হাই কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশের পর অবশেষে পুরোনো বাসগুলির ‘স্বাস্থ্য’ যাচাই করে পারমিট দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল পরিবহণ দফতর। বহুদিনের জট কেটে যাওয়ায় বেসরকারি বাসমালিক সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক জয়’ হিসেবে দেখছেন।
হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, ‘বয়স নয়, স্বাস্থ্যই প্রধান’। যানবাহনের দূষণমাত্রা, ফিটনেস ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা খতিয়ে দেখে যদি কোনও বাস চালানোর উপযুক্ত হয়, তবে বয়ঃসীমা পেরোলেও তাকে রাস্তায় নামতে দিতে হবে। এই নির্দেশ মেনেই কেএমডিএ এলাকায় ১৫ বছরের বেশি পুরোনো বাসের জন্য পারমিট দেওয়া শুরু করেছে পরিবহণ দফতর।
আজ, বুধবার প্রথম এক বাসকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাসটির মালিক ও পশ্চিমবঙ্গ বাস মিনিবাস মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ নারায়ণ বসু বললেন, 'এটা আমাদের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের ফল। আমরা বহু সঙ্গীকে হারিয়েছি। তাঁরা এই ঐতিহাসিক জয় দেখে যেতে পারলেন না। এরফলে শহরে আরও বেশি বাস নামবে এবার। আরও বাসকে পারমিট দেওয়া হবে।'
২০০৯ সালে পরিবেশ আদালতের নির্দেশে কেএমডিএ এলাকায় ১৫ বছরের বেশি পুরোনো পেট্রল-ডিজেল চালিত বাস চলায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ফলে বহু বাস বাতিলের মুখে পড়েছিল। বাসমালিকরা ১৩ মাস আগে আদালতে আবেদন জানান, লকডাউনের সময়ে দুই বছর বাস না চললেও সেই সময়টুকু বয়স হিসেবে ধরা হয়েছে, যা অন্যায়। পাশাপাশি অনেক পুরোনো বাসই এখনও চলার উপযুক্ত।
ওই মামলার ভিত্তিতে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ নির্দেশ দেন, বয়স নয়, দূষণমাত্রা ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় বাসকে মূল্যায়ন করতে হবে। শুক্রবার বিচারপতি মামলার নিস্পত্তি করেন। পাশাপাশি আদালতে পেশ করা খসড়া বিজ্ঞপ্তিটি অতি দ্রুত সাধারণের জন্য প্রকাশ করার নির্দেশও দেন তিনি। বহুদিন ধরে চলার পর মামলার এই রায়কে 'ঐতিহাসিক জয়' বলে মনে করছেন বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্বরা। এই রায়ের ফলে প্রায় ৭০০-৮০০ বাস আবারও কলকাতার রাস্তায় যাত্রীপরিষেবা দেওয়ার সুযোগ পাবে বলে জানা গেছে।