Advertisement

Bengal 5 Key Takeaways: বিহারের রাস্তায় বাংলা? বিজেপির বঙ্গজয়ের চাবিকাঠি এই ৫ ফ্যাক্টর

, এবার বঙ্গভূম দখলে নামবে গেরুয়া শিবির। গতবার যা হাতছাড়া হয়েছিল। যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন,'বিহারের ভোটের ফলের বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না বাংলায়। দুই রাজ্যের ইস্যু একেবারে আলাদা'। বিহারের থেকে বাংলা কোথায় আলাদা? কী কী ফ্যাক্টর হতে পারে?

পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ৫ ফ্যাক্টর।পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ৫ ফ্যাক্টর।
Aajtak Bangla
  • কলকাতা ,
  • 14 Nov 2025,
  • अपडेटेड 12:05 AM IST
  • এবার বাংলা জয়ের ডাক প্রধানমন্ত্রী মোদীর।
  • বাংলায় কি সত্যিই জয় সম্ভব?

অঙ্গ জিতেই বঙ্গজয়ের ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জয়ের ভাষণে বললেন,'বাংলাকে রাস্তা দেখাল বিহার। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কর্মীদের উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে। বাংলা থেকেও জঙ্গলরাজ উৎখাত করব'। এটুকুতেই স্পষ্ট, এবার বঙ্গভূম দখলে নামবে গেরুয়া শিবির। গতবার যা হাতছাড়া হয়েছিল। যদিও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন,'বিহারের ভোটের ফলের বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না বাংলায়। দুই রাজ্যের ইস্যু একেবারে আলাদা'। বিহারের থেকে বাংলা কোথায় আলাদা? কী কী ফ্যাক্টর হতে পারে?

মহিলা ভোটার: বিহারে বিজেপির জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন মহিলা ভোটাররা। গতবারের চেয়ে ৯ শতাংশ বেড়েছে মহিলা ভোটদানের হার। ফল পর্যালোচনা করে বুঝতে বাকি নেই, মহিলা ভোটের সিংহভাগই গিয়েছে এনডিএর ঝুলিতে। ভোটের ঠিক আগে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছে বিহার সরকার। যা নির্বাচনী উপঢৌকন বলে প্রচার করেছিল বিরোধীরা। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নারী সুরক্ষার বিষয়টিও। মহিলাদের মধ্যে নীতীশের জনপ্রিয়তা সেই ২০০৫ সাল থেকে। বিহারে লালুর জমানায় মহিলাদের সন্ধের পর রাস্তায় বেরোনো ছিল দুর্গম। অপহরণের মতো ঘটনাও আকছার ঘটত। কড়া হাতে প্রশাসন সামলে নীতীশ নারীসুরক্ষার বিষয়টি অনেকাংশেই নিশ্চিত করতে পেরেছেন। সেই ২০০৫ সালে এনডিএ ক্ষমতায় আসার পর মহিলাদের সাইকেল দেওয়ার প্রকল্প চালু হয়েছিল। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মদ বিক্রিও বন্ধের মতো কড়া সিদ্ধান্ত। নীতীশকে দু'হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন মহিলারা। বাংলাতেও ফ্যাক্টর হতে চলেছে এই মহিলা ভোটার। লক্ষ্মীর ভান্ডার, সবুজ সাথী, বিধবা ভাতার মতো প্রকল্প চালায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ রাজ্যে মহিলা ভোটাররা তাই মমতার বিশ্বস্ত। মহিলা ভোটব্যাঙ্কে বিজেপি কতটা ভাগ বসাতে পারবে, তার উপর নির্ভর করছে তাদের ভোটের ভাগ্য। সেই সম্ভাবনা একেবারেই যে নেই, তা নয়। কারণ অতিসম্প্রতি সন্দেশখালি, আরজি করের মতো ঘটনায় নারীসুরক্ষা নিয়ে উঠেছে গুরুতর প্রশ্ন। আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পাল্টা অন্নপূর্ণা ভাণ্ডারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

মুখ: বিহারে নীতীশই হলেন 'মুখ'। ইদানীং শরীর ঠিক না থাকলেও তাঁকে সামনে রেখে ভোটে গিয়েছিল বিজেপি। আরজেডির হাত ছেড়ে নীতীশ আসতে চাইলে তাঁকে আপন করে নিতে দেরি করেননি বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ বিহারে এনডিএ যে মুসলিম ভোট পায়, সেটাও নীতীশের সৌজন্যেই। নীতীশের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তিও স্বচ্ছ। বিরোধীরাও তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেননি। বরং গোটা নির্বাচনে সরাসরি নীতীশকে আক্রমণের পথে হাঁটেননি তেজস্বী, রাহুলরা। উল্টে, তাঁকে কেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঘোষণা করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেছেন। অন্যদিকে, বাংলায় বিজেপির মুখের সঙ্কট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো রাজনীতিকের বিরুদ্ধে এঁটে উঠতে গেলে মুখ দরকার। বামেদের বিরুদ্ধে মুখ মমতা ছাড়া আর কাউকে যেমন ভাবাই যেত না। বিজেপির অবশ্য নরেন্দ্র মোদীই মুখ। দিল্লি-সহ বহু রাজ্যেই মোদীকে সামনে রেখেই তারা বাজিমাত করেছে। তবে ২০২১ সালে মোদীর মুখে বাংলায় সাফল্য আসেনি।

আরও পড়ুন

MY ভোট: জাতপাতের বিহারে MY মানে মুসলিম ও যাদব ভোট যেত আরজেডির ঝুলিতে। সেই ভোটে সিঁধ কেটেছে জেডিইউ। মুসলিমবহুল বিধানসভাগুলিতে তারা ভালো ফল করেছে। কিন্তু বাংলায় কি মুসলিম ভোট বিজেপি নিজেদের দিকে টানতে পারবে? কারণ বাংলায় মুসলিম ভোট নির্ণায়ক শক্তি। অন্তত ১১০টি আসনে মুসলিম ভোটে জয়-পরাজয় ঠিক হয়ে যায়। বাংলায় মুসলিম ভোট বিজেপি পায় না। কিন্তু, নীতীশকে ভোট দেন বহু মুসলিম। তা বিহারের ফলেও স্পষ্ট। বাংলায় ঠিক এই জায়গাতেই পিছিয়ে মোদী-শাহের দল। যদিও পাল্টা MY ফর্মুলার হদিশ পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। বিহারে জয়ের পর তিনি জানান,'মহিলা ও যুবা ভোট আমার MY ফর্মুলা'। বলাই বাহুল্য বাংলাতেও একই কৌশল নেবে বিজেপি। কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন, বেকারত্বের মতো ইস্যুতে বাংলার যুবক-যুবতীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সেই ভোটই যেতে পারে বিজেপির দিকে।

SIR: বিহারে এসআইআরের প্রভাব কতটা পড়েছে, তা আগামী দিনে বোঝা যাবে। তবে নেতিবাচক প্রভাব যে বিজেপির উপর পড়েনি, তা বুঝে নিতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার পড়ে না! বাংলাতে এসআইআর প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়ার বহু আসনেই মতুয়া ও শরণার্থী হিন্দুদের ভোটার ফারাক গড়ে দেয়। সেই ভোটাররা সংশয়ে। আবার এসআইআরের ফলে শঙ্কায় মুসলিমরা। তাঁরা 'দেশহীন' হওয়ার ভয় পাচ্ছেন। সেই ভোটের কিয়দংশই পাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআরে বিজেপি লাভবানও হতে পারে। কী রকম? মৃত ও অবৈধ ভোটার বাদ গেলে তালিকা অনেক স্বচ্ছ হবে। বিজেপি নেতাদের অন্তত এমনটাই আশা।

সংগঠন: ভারতে ভোটে জিততে সংগঠন দরকার। তৃণমূলের সংগঠন নিয়ে শব্দ খরচ করে লাভ নেই। পাঠকরা জানেন। কিন্তু বিজেপির কি সাংগঠনিকভাবে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে? এটা একটা বড় প্রশ্ন। বিজেপি নেতারা মুখে যতই বলুন, তাঁরা জানেন সংগঠনের অবস্থা! ক্রাউড পুলার মমতা, সেই সঙ্গে শক্তিশালী সংগঠন- দুইয়ে মিলিয়ে তৃণমূল অপ্রতিরোধ্য। মাঝের কয়েকটা বছর বাদ দিয়ে ২০০৫ সাল থেকে বিহারে ক্ষমতায় বিজেপি। সরকারি যন্ত্রও তাদের হাতে। হিন্দুত্বের ভাবাবেগ, রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ভয় দেখিয়ে একটা বড় অংশের হিন্দু ভোটকে একজোট করতে পেরেছে বিজেপি। কিন্তু সেই ভোটারদেরকে ইভিএম পর্যন্ত নিয়ে যেতে সংগঠন চাই। মনে করিয়েই দিই, চিরাচরিতভাবেই বাংলার ভোট হিংসাপ্রবণ। শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসায় ভোটবৈতরণী পার হওয়া বঙ্গভূমে সম্ভব নয়।

পরিশেষে, একটা সময় সিপিএম বলত, দিদি থেকে দিদিমা হয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না মমতা। কালের চাকা ঘুরেছে। মমতা এখন মুখ্যমন্ত্রী। তাই রাজনীতিতে অসম্ভব কিছুই নেই। এ হল সম্ভাবনার খেলা। অপেক্ষা আর কয়েক মাসের। ২০২৬ সালের মে মাসের শুরুতেই জানা যাবে, বঙ্গভূমের রাজ্যপাঠ কার হাতে যাবে?

Read more!
Advertisement
Advertisement