Heart Attack Prevention in Hot Summer: গরমকালে হার্ট সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত হাইড্রেশন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, হালকা ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। উপরন্তু, নিজের শরীরের সংকেত বুঝে যদি কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই পদক্ষেপগুলো হার্টের সুস্থতা রক্ষা করে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
এখন কম বয়সেই হার্ট অ্যাটাকে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। প্রবল গরমে জীবন একেবারে নাজেহাল। চড়া রোদে মানুষের অবস্থা খারাপ। যখন তখন হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তীব্র গরমের ফলে আপনার অজ্ঞাতসারে বাড়তে পারে হৃদ্রোগের ঝুঁকিও। বিপদের সামনে এসে দাঁড়াতে পারে যখন তখন। বিশেষজ্ঞদের মতে, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কোনও আগাম সঙ্কেত ছাড়াই আসে। হৃদ্স্পন্দন অনিয়মিত হতে শুরু করলেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
গরমকালে হার্ট সুস্থ রাখার উপায়
গরমের সময় শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যার মধ্যে হৃদপিন্ডও অন্যতম। উচ্চ তাপমাত্রা, আর্দ্রতা ও শারীরিক ক্লান্তি হৃদপিণ্ডের কাজকে প্রভাবিত করতে পারে। সঠিক যত্ন, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার পরিবর্তন হৃদপিণ্ডের সুস্থতা রক্ষা করতে সহায়ক।
১. পর্যাপ্ত হাইড্রেশন (জল পান করা)
দৈনিক পর্যাপ্ত পানি পান করা: গরমকালে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি নিঃসৃত হয়। তাই দিনব্যাপী পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ তরল (যেমন, নারকেলের জল, লেবুর পানি বা স্পোর্টস ড্রিঙ্ক) গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি খুব দ্রুত হাইড্রেশন সম্পন্ন না করলে ডিহাইড্রেশন, হার্ট রেট বৃদ্ধি ও রক্তচাপের অবনতি হতে পারে।
২. সঠিক খাদ্যাভ্যাস
তাজা ফল ও সবজি: পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ও সবজি যেমন আপেল, কমলা, বেরি, শসা ও টমেটো অন্তর্ভুক্ত করুন। এইসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও পুষ্টি উপাদান থাকে যা হৃদপিণ্ডের সুস্থতা রক্ষা করে।
কম স্যাচুরেটেড চর্বিযুক্ত খাবার: অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ও জাঙ্ক ফুড থেকে বিরত থাকুন যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য বা অ্যানেজিওপ্যাথি (রক্তনালী বিপন্নতা) এড়ানো যায়।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার: মাছ, বাদাম ও বীজের মাধ্যমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করা হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে উপকারী।
৩. নিয়মিত ও সঠিক ব্যায়াম
হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং: গরমকালে অতিরিক্ত ভারী ব্যায়াম করার পরিবর্তে হালকা পদযাত্রা, যোগব্যায়াম ও স্ট্রেচিং করার চেষ্টা করুন। সকালের বা সন্ধ্যার কম তাপমাত্রার সময় ব্যায়াম করতে পারেন।
শারীরিক চাপের শীর্ষ সীমা: খুব বেশি শারীরিক পরিশ্রম হার্টের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তাই শরীরের লক্ষণ যেমন মাথা ব্যথা, দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ঘাম হলে বিরতি নেয়া উচিত।
৪. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম
প্রচুর ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম হরমোনের সামঞ্জস্য রক্ষা করে এবং স্ট্রেস কমায়, যা হৃদপিণ্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্রামের গুরুত্ব: কাজের মাঝে ছোটখাটো বিরতি নিয়ে শরীরকে আরাম দিতে হবে, বিশেষ করে গরমকালে।
৫. স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: ধ্যান, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস বা মৃদু মেন্টাল এক্সারসাইজ হার্টের উপর মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।
পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সংযোগ: সামাজিক সমর্থন হার্টের সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
৬. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
হার্টের অবস্থা পর্যবেক্ষণ: গরমকালে বা যে কোনও সময় নিয়মিত মেডিকেল চেক-আপ করুন। রক্তচাপ, হার্ট রেট এবং অন্য কোনো লক্ষণ ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডাক্তারের পরামর্শ: যাদের পূর্ব থেকেই হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে, তারা বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও জীবনধারার পরিবর্তন প্রয়োগ করতে হবে।
৭. পরিবেশগত যত্ন ও প্রাকৃতিক মাধ্যম
পরিষ্কার ও হাওয়াযুক্ত জায়গায় থাকা: গরমের সময় অল্পতম তাপমাত্রার পরিবেশে থাকা এবং এয়ার কন্ডিশনিং বা ফ্যানের ব্যবহার করা উপকারী। সানস্ক্রিন ও হ্যাটের ব্যবহার: সরাসরি সানব্লকিং এড়াতে হালকা ও ঢেকে রাখা পোশাক ও টুপি ব্যবহার করুন।