বর্ষা মানেই বৃষ্টি, খিচুড়ির সঙ্গে আরও একটা যেই জিনিসের কথা মাথায় আসে তা হল ইলিশ। রুপোলী ফসল পছন্দ করেন না কিংবা ইলিশের নাম শুনলে জিভে জল আসে না এমন বাঙালি বোধ হয় খুব কমই আছে।
ইলিশ ভাপা, সর্ষে ইলিশ, দই ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, ইলিশ বিরিয়ানি, ইলিশ মাছ ভাজা কিংবা ইলিশের ডিমের পদ ছাড়াও আরও একাধিক রান্না দিয়ে তালিকা অনেক লম্বা। তবে শুধু যে স্বাদ বা গন্ধে এই মাছের রাজকীয়তা তা কিন্তু নয়। ইলিশের রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। দেখে নিন এক নজরে।
দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে
ইলিশে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। যা চোখ ভাল রাখতে সাহায্য করে। যাঁদের দৃষ্টিশক্তি কমে আসার সমস্যা থাকে, তাঁরা ইলিশ খেয়ে উপকার পাবেন।
হার্ট ভাল রাখে
যেহেতু এই মাছে প্রচুর ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, এটি হার্ট সুস্থ রাখতে কার্যকরী। সেই সঙ্গে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ইলিশ। এতে সম্পৃক্ত চর্বি কম থাকে ফলে সুস্থ থাকে হার্ট।
খনিজ উপাদানে ভরপুর
ইলিশ মাছে রয়েছে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক,সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামের মতো একাধিক খনিজ উপাদান। ফসফরাস দাঁত এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয়। অন্যদিকে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও লৌহ শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং মানসিক বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
ভিটামিনে ভরপুর
ইলিশে ভিটামিন এ, ডি এবং ই আছে। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে এবং ডি, শিশুদের রিকেট রোগ থেকে রক্ষা করে। তাই এই মাছ শিশুদের জন্যেও উপকারী।
ত্বক ভাল রাখে
ইলিশে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাট ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রোটিন কোলাজেনের অন্যতম উপাদান। এই কোলাজেন ত্বক নমনীয় রাখতে সাহায্য করে এবং বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়
যেহেতু ইলিশ মাছে ইপিএ ও ডিএইচএ নামক ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, সেই কারণেই ইলিশ মাছ খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়।
পেটের যত্নে
আলসার, কোলাইটিসের মতো রোগের হাত থেকে রক্ষা করে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যসিড। ডায়েটে তেলযুক্ত মাছ থাকলে পেটের সমস্যা অনেক কম হয়। তাই ইলিশ খাওয়া উপকারী।
ফুসফুসের জন্য ভাল
সামুদ্রিক মাছ ফুসফুসের জন্য খুবই ভাল। যাঁরা নিয়মিত ইলিশ মাছ খান, তাঁদের ফুসফুস অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে হাঁপানি রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ।
মস্তিষ্কের জন্য ভাল
অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার(ADHD) রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি, পড়াশোনায় মনযোগ ইত্যাদিও বাড়ায়। মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশই তৈরি ফ্যাট দিয়ে। যার অধিকাংশই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে ডিএইচএ।
অবসাদ থেকে রক্ষা মেলে
ইলিশে মজুত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অবসাদের মোকাবিলা করতে পারে। সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার (SAD), পোস্ট ন্যাটাল ডিপ্রেশনের মতো মানসিক সমস্যাগুলি কাটাতে পারে ইলিশ মাছ।