এবার আইসক্রিমও ভেজাল! গুণগত মান বজায় না থাকার অভিযোগ। আর সেই মর্মেই খাদ্যবস্তুর উপর লেবেলিং করা নিয়ে এবার কড়া বিবৃতি জারি করল Food Safety and Standards Authority of India (FSSAI)। সেখানে বলা হয়েছে, নির্ধারিত মান পূরণ না করলে আইসক্রিম শব্দের লেবেল ব্যবহার করা যাবে না।
প্যাকেটজাত খাবারের উপর সাধারণত লেবেল থাকে। অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ এই লেবেলগুলো মনোযোগ সহকারে পড়লেও বেশিরভাগ মানুষই এটিকে গুরুত্ব দেয় না। এই খাদ্যপণ্যের লেবেলগুলি কেবল উপাদানগুলিই নির্দেশ করে না, বরং পণ্যটি কোন আইনি শ্রেণিতে রাখা হয়েছে, তা-ও নির্দেশ করে।
সম্প্রত FSSAI খাদ্যপণ্যের উপর লেবেলিং সম্পর্কে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করেছে। তারা সমস্ত খাদ্য ও পানীয় কোম্পানিহুলিকে তাদের পণ্যে ORS (ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন) শব্দটি ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
ইউনিসেফের মতে, ORS হল জলে গুলে যাওয়া নুন-চিনির মিশ্রণ এবং ডিহাইড্রেশন, ডায়রিয়া বা হিট স্ট্রোকের মতো পরিস্থিতিতে সাধারণত এটির ব্যবহার হয়। তবে বাজারে এখন অনেক পানীয় ORS-এর নামে পাওয়া যায়। যা এই শব্দটির অপব্যবহার করে দেদার বিক্রি হচ্ছে।
FSSAI জানিয়েছে, কোনও সংস্থা কোনও পণ্যে ORS শব্দটি ব্যবহার করতে পার না যদি না এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান সম্পূর্ণরূপে পূরণ করে। ফল ভিত্তিক, নন-কার্বনেটেড বা অন্য কোনও পানীয়ই হোক না কেন।
FSSAI-এর মতে, এই জাতীয় কোনও পণ্যে ORS শব্দটি ব্যবহার করা খাদ্য সুরক্ষা ও মান আইন ২০০৬ এবং এর অধীনে নিয়মগুলির লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।
তবে এই কড়া বিবৃতি কেবলমাত্র ORS-এর ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়, আইসক্রিম, ফলের রস কিংবা ডিজার্টের মতো লেবেল ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও রয়েছে কড়াকড়ি। শুধুমাত্র গুণমান পূরণ করতে পেরেছে এমন সংস্থাগুলিকেই এই লেবেলিংয়ের অনুমতি দেওয়া হবে।
অর্থাৎ প্যাকেজিংয়ের প্রতিটি শব্দই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটিই নির্ধারণ করে আপনি যা খাচ্ছেন তা স্বাস্থ্যকর কি না। কীভাবে একজন সাধারণ মানুষ দৈন্যন্দিন জীবনে খাবারের লেবেলিং চিনবেন।
Crème vs Cream: যদিও প্রথম নজরে শব্দদু'টি একইরকম মনে হয়। তবে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। ২০১১ সালের FSSAI-এর নিয়ম অনুসারে, Crème হল এমন একটি দুগ্ধজাত পণ্য যাতে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ দুধের চর্বি থাকে এবং অবশ্যই এটি দুধ থেকে তৈরি, উদ্ভিজ্জাত তেল নয়। Cream হল জীবাণুমুক্ত। গোরু বা মহিষের দুধ অথবা এই দু'টির সংমিশ্রণ থেকে তৈরি একটি পণ্য।
দুগ্ধজাত পণ্য নয় এমন পণ্যে এক ধরনের ক্রিম ব্যবহার করা হয় যা দুধ নয়, উদ্ভিজ্জ তেল দিয়ে তৈরি। এই কারণেই ক্রিম বিস্কুটগুলিতে উদ্ভিজ্জ তেল ভিত্তিক ক্রিম ছিল। তবে এর স্বাদ এবং গঠণ আসল ক্রিমের মতোই। FSSAI অনুযায়ী, এই ধরনের ভুল লেবেলিংও বিভ্রান্তিকর এবং আইনের লঙ্ঘন।
আইসক্রিম বনাম ফ্রোজেন ডেজার্ট: আইনক্রিম এবং ফ্রোজেন ডেজার্ট লেবেলিং সম্পর্কেও সতর্ক হওয়া উচিত প্রত্যেকের। FSSAI নিয়ম অনুযায়ী, আইসক্রিমকে কেবল তখনই আইসক্রিম বলা যেতে পারে যদি এটি দুধের চর্বি দিয়ে তৈরি করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আইসক্রিম তৈরিতে দুধের ক্রিম, মাখন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
অন্যদিকে, ফ্রোজেন ডেজার্ট দেখতে এবং স্বাদে আইসক্রিমের মতো কিন্তু দুধের পরিবর্তে তা উদ্ভিজ্জ তেল বা উদ্ভিদজাত চর্বি ব্যবহার করা হয়। এই ধরনের মিষ্টি তৈরির উদ্দেশ্য হল খরচ কমানো এবং শেলফ লাইফ বাড়ানো।
FSSAI সংস্থাগুলিকে কঠোর ভাবে নির্দেশ দিয়েছে, প্যাকেজিং স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করতে হবে যে তারা ফ্রোজেন ডেজার্টকে আইসক্রিম বলে উল্লেখ করে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত না করে।