বেশিরভাগ মানুষ ঘুমোলে স্বপ্ন দেখেন। কখনও ভালো স্বপ্ন দেখার পর তা মনে থাকে না। কিন্তু খারাপ বা ভয়ানক স্বপ্ন দেখলে তা অনেক সময় মনে থেকে যায় এবং গোটা দিন মানসিক অস্থিরতা কাজ করে। কখনও ভয়ানক স্বপ্ন দেখে ঘুমও ভেঙে যায়। মানুষ স্বপ্ন কেন দেখে তার পিছনের সম্পূর্ণ কারণ বৈজ্ঞানিকরা এখনও পর্যন্ত খুঁজে চলেছেন। তবে ভয়ানক বা খারাপ স্বপ্ন দেখার পিছনে কিছু কারণ থাকে।
মানসিক চাপ - কাজ বা স্কুলের বিষয়ে অতির্কিত চিন্তা ভয়ানক স্বপ্নের কারণ হতে পারে। এর ফলে মানসিক চাপ তৈরি হয়। কোনও প্রিয়জন যদি দূরে চলে যান বা তিনি যদি মারা যআন সে ক্ষেত্রেও এ ধরনের স্বপ্ন দেখতে পারেন।
মানসিক আঘাত পেলে - হঠাৎ কোনও মানসিক আঘাত পেলে বা শক পেলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে। অতীতের কোনও ঘটনা যেমন শারীরিক হেনস্থা, সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট, ধর্ষণ বা দুর্ঘটনার ফলে এ ধরনের মানসিক আঘাত লাগতে পারে। কিছু মানুষের পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস জিসঅর্ডার বা PTSD-র সমস্যা হতে পারে।
মানসিক অসুখ - কিছু ধরনের মানসিক অসুখ যেমন বাইপোলার ডিসঅর্ডার, ডিপ্রেশন, বার বার প্যানিকে আক্রান্ত হওয়া, স্কিৎজোফ্রেনিয়া-র মতো রোগ থাকতে ভয়ানক স্বপ্ন দেখার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
কিছু ওষুধের সাইড এফেক্ট - কিছউ ওষুধের সাইড এফেক্টের কারণেও এ ধরনের স্বপ্ন দেখতে পারেন। যেমন অ্যান্টি ডিপ্রেস্যান্ট, রক্তচাপের ওষুধ, পার্কিনসন্স রোগের ওষুধ খাওয়ার ফলেও ভয়ানক স্বপ্ন দেখতে পারেন। হঠআৎ করে ওষুধ বন্ধ করে দিলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
ঘুম ভালো না হওয়া - ভালো ঘুম না হলেও খারাপ ভয়ানক স্বপ্ন দেখতে পারেন। ঘুমের সময়ের পরিবর্তন হলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
শোয়ার ঠিক আগে খাওয়া - শোয়ার ঠিক আগেই খাওয়ার ফলে মেটাবলিজম দ্রুত হয় এবং ব্রেন বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। শোয়া এবং খাওয়ার মধ্যের ব্যবধান বাড়ালে এ ঘটনা কমে যায়।
স্লিপ অ্যাপনিয়া - যাঁদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা রয়েছে তাঁরা ভয়ানক স্বপ্ন বেশি দেখেন। অ্যাপনিয়ার ফলে তৈরি হওয়া মানসিক সমস্যার কারণেই এমনটা হয়। এর জন্য আলাদা থেরাপিও রয়েছে।
ভয়ের বই বা মুভি দেখা - কখনও ভয়ের উদ্রেক করে এমন বই পড়া বা সিনেমা দেখার ফলেও এ ধরনের স্বপ্ন দেখতে পারেন। যদি সেটা ঘুমের ঠিক আগে হয় তবে ব্রেনে তার প্রভাব বেশি থাকে। কিছু ভিডিও গেম বা টিভি শো-এরও একই ধরনের প্রভাব লক্ষ্য করা যেতে পারে।
কী করবেন - কিছু বিশেষ পদ্ধতিতে আপনি এই ধরনের স্বপ্ন দেখা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। দিনের একই সময় ঘুমোন এবং ঘুম থেকে ওঠা অভ্যাস করুন। অ্যালকোহল, সিগারেট, ক্যাফেন থেকে দূরে থাকুন। দিনের শুরুতে হালকা এক্সারসাইজ করুন। ঘুমোনোর ঠিক আগে টিভি দেখা, মুভি দেখা বা ভিডিওগেম খেলা বন্ধ করুন। যদি এ সব করার পরেও আপনি ভয়ানক স্বপ্ন দেখতে থাকেন তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।