পুজোর ছুটিতে হিল্লি দিল্লির বদলে যদি তরাইয়ে ঘুরতে যেতে চান, অর্থাৎ পাহাড়ের কোলে খরস্রোতা তিস্তা নদীর পাড়ে তাবুতে হ্যারিকেনের আলোয় রাত কাটাতে চাইলে আপনার ডেস্টিনেশন হতে পারে কালিম্পঙের ত্রিবেণী। এখানে এলে পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবে নিস্তব্ধ পরিবেশে পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
পাহাড়ের গা বেয়ে বয়ে চলা স্বচ্ছ তিস্তা নদীর মদিরাময় নেশাতুর একঘেঁয়ে মনোটোনি। এছাড়াও রাতে তাঁবুতে থেকে বর্নফায়ার এবং বারবিকিউ। কিছুটা সময় নিজের মতো করে কাটানোর অফুরন্ত সুযোগ রয়েছে এখানে। তাই পাহাড়ঘেরা খরস্রোতা তিস্তার নদীর বুকে নিস্তব্ধ কিছুটা সময় কাটাতে চাইলে বেরিয়ে পড়ুন ত্রিবেণীর উদ্দেশ্য।
উত্তরবঙ্গের পাহাড় ডুয়ার্স বরাবরই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। উত্তরবঙ্গে পর্যটকরা এলে মূলত পাহাড়ের চা বাগান, বনবস্তি এবং প্রত্যন্ত গ্রামের হোমস্টেতে এলাকায় সময় কাটায়। তবে নদীর বুকে রাত কাটানোর অ্যাডভেঞ্চারটা একেবারেই আলাদা। যারা এমন পর্যটন কেন্দ্রের সন্ধানে রয়েছেন তাদের জন্য কালিম্পঙের ত্রিবেণী আদর্শ ভ্রমণ স্থল।
এখানে এলে পর্যটকরা শহরের কোলাহল থেকে কিছুটা নিস্তব্ধ নিরিবিলিতে পাহাড়ের প্রকৃতির সৌন্দর্যকে উপভোগ করে সময় কাটাতে পারবে। শুধু তাই নয় এখানে পাহাড়ি দুই খরস্রোতা নদী তিস্তা ও রঙ্গিত নদীর মিলন স্থলে নদীর একেবারে পাড়ে রাত্রি যাপন করতে পারবে। রাতে নদীর পাড়ে থাকা তাঁবুতে হারিকেনের আলোতে বনফায়ার করে নিজেদের মধ্যে গল্পগুজব আড্ডা সময় কাটাতে পারবেন পর্যটকরা।
কীভাবে যাবেন ?
কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যে কোনও ট্রেন ধরে শিলিগুড়ির নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামতে হবে। এরপর সেখানে ছোট গাড়ি রিজার্ভ করলে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে পাহাড়ঘেরা এই ছোট্ট জনপদে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের কালিম্পঙগামী বাস বাসে যাওয়া যেতে পারে ত্রিবেণীতে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ত্রিবেনীর দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। ছোটো গাড়িতে সময় লাগবে প্রায় দু'ঘণ্টা কাছাকাছি।
কোথায় থাকবেন ?
ত্রিবেণীতে থাকার জায়গা বলতে তিস্তা ও রঙ্গীত নদীর রিভার বেডে থাকা তাঁবু। এখানে পাঁচতারা হোটেলের মত অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও রাতের অন্ধকারে খোলা আকাশের নিচে হারিকেনের আলোতে রাত কাটানোর আনন্দ আনে আলাদা এক অনুভূতি। এখানে সব মিলিয়ে তিস্তার বুকে প্রায় দুশোটি তাঁবু রয়েছে। তবে পর্যটন ভরা মরশুমে আগে থেকে বুক করে যেতে হবে।
কি খাবেন ?
এখানে খাবার বলতে আলাদা করে কোনও হোটেল কিংবা রেস্তোরাঁ নেই। যে তাঁবুতে থাকবেন সেখানেই মিলবে খাবারের ব্যবস্থা। তবে রাতে আগুন জ্বালিয়ে চিকেন বারবিকিউ করে খাওয়া যেতে পারে। তবে এর জন্য তাঁবুর দায়িত্বে থাকা কর্মীদের বললে তাঁরা এই সমস্ত ব্যবস্থা করে দেবে।
খরচ কেমন
ত্রিবেণীতে খরচ বলতে তাঁবুতে থাকার জন্য মাথাপিছু প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এছাড়াও নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছোটো গাড়ি রিজার্ভ করে গেলে খরচ হতে পারে আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজারের কাছাকাছি।
দর্শনীয় স্থান
ত্রিবেণী থেকে পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারেন ব্রিটিশ আমলে তৈরি করোনেশন সেতু ও সেবক । এছাড়াও এখান থেকে সরাসরি শৈলশহর দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সিকিমে যাওয়া যেতে পারে।